স্বাতী ভট্টাচার্য:
তোমার দেখার মধ্যে যেন একটা নিজস্বতা থাকে। তোমার রিপোর্টে এমন কিছু যেন থাকে, যা আর কারও নজরে আসেনি।
এ কথাগুলো গৌরকিশোর ঘোষের। সোমবার তাঁর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ছিল, রবীন্দ্রসদনের সব আসন ভরে গিয়েছিল। সুন্দর, সারবান বক্তৃতা দিলেন সুগত বসু, মেধা পাটকর, আর তারপর একটি তথ্যচিত্র, যেখানে গৌরবাবুর জীবন, তাঁর কথা, তাঁর নিজের অনেক সংলাপ। যেমন, জুনিয়র রিপোর্টারদের তিনি বলতেন, এমন কিছু দেখো যা আর কারও চোখে পড়েনি। সত্যিই তো, লোকে যা দেখেও দেখে না, তা দেখাই তো সাংবাদিকের কাজ।
এ দিনই যেমন। কী সুন্দর করে সাজানো মঞ্চের সামনেটা, সাদা ফুলের গোছা, আর জুঁইফুলের মালায়। কী রুচিশীল পোশাক সব বক্তার, সাদা জামাতে সামান্য স্ট্রাইপ, সাদা জমির শাড়িতে অল্প ফুলের ছাপ,। বক্তাদের পিছনে মস্ত কালো হোর্ডিং-এ গৌরকিশোরের মুখ, সামনে সাদা কাপড়ে ঢাকা টেবিল, তাতে ছোট ছোট পাত্রে সাজানো ফুল। এই আন্ডারস্টেটেড এলিগ্যান্সের আসরে মূর্তিমান ছন্দপতনের মতো আসা-যাওয়া কিছু কর্মীর। টেবিল চেয়ার বয়ে আনলেন, মাইকের হাইট ঠিক করে দিলেন তাঁরা। তাঁদের পোশাক ঝলঝলে টিশার্ট, কিংবা চড়া রঙের রঙিন পাঞ্জাবি, সঙ্গে ফিট না-করা প্যান্ট। সেই পোশাক যেন ঘোষণা করছে, ওই লোকগুলো এই অনুষ্ঠানের কেউ নন। টেবিল-চেয়ারকেও মানিয়ে যেতে হবে, কিন্তু ওই কর্মীদের জন্য তার দরকার নেই। ওঁরা যে আছেন, তা আবার কেউ দেখে নাকি?
গৌরকিশোর থাকলে দেখতেন।