ইহুদীবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলে ইয়াইর নেতানিয়াহু তার বাবার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অঙ্ক নেয়া ইসরাইলি ইহুদী বিক্ষোভকারীদের সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, তাদেরকে অবশ্যই জেলে ভরা হবে। টুইটার পোস্টে ইয়ায়ির নেতানিয়াহু বলেন, তারা বিক্ষোভকারী নয়। তারা বিশৃংখলাকারীও নয়। তারা সন্ত্রাসী। তিনি বলেন, দুর্বৃত্ত এবং বদমাইশ বিলিয়নিয়ারদের অর্থায়নে সহিংস গোপন কার্যক্রম সামনে এসেছে। এমনকি সময় দেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তারা তাদের সকল অপরাধ বাস্তবায়ন করে ফেলবে। এরপর জেরুসালেম পোস্টে এক ফলো-আপ টুইটে ইয়াইর নেতানিয়াহু বলেন, ইউরোপিয়ান আলোকজ্জ্বল বামপন্থীরা তাদের বদলে যাওয়ার কাজ শেষ করে এখন তাদের ফিলিস্তিনি বর্বর ভাইদের জমজে পরিণত হয়েছে। মিডল ইস্ট মনিটর এ খবর জানায়। অপর এক খবরে বলা হয়, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আবারও বিক্ষোভ করেছেন লাখো ইসরাইলি নাগরিক। মূলত নেতানিয়াহুর নতুন সরকারের বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ৪ মার্চ এই বিক্ষোভ আয়োজন করা হয় এবং এতে লাখো মানুষ অঙ্ক নেন। এ নিয়ে টানা নবম সপ্তাহ লাখো বিক্ষোভকারী ইসরাইলি শহরগুলোর রাস্তায় নামলেন। রবিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে তেল আবিব এবং অন্যান্য স্থানে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়েছিল। তবে পরে পুলিশের প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা তেল আবিবে বাধা ভেঙে সামনে এগোনোর চেষ্টা করছেন এবং রাস্তা অবরোধ করে আগুন জ্বালাচ্ছেন। পুলিশ অবশ্য পরে বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করে। শনিবারের বিক্ষোভে অঙ্ক নিয়েছিলেন ৫৩ বছর বয়সী ইতিহাসের শিক্ষক রনেন কোহেন। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আমি শাসকদলের বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে এসেছি, যা ইসরাইলি সরকার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আমি আশা করি, বিশাল এই বিক্ষোভ কার্যকর হবে এবং প্রমাণ করবে যে- আমরা হাল ছেড়ে দিই না।’ ইসরাইলের বিচার ব্যবস্থাকে সংশোধন এবং সুপ্রিম কোর্টকে দুর্বল করার একটি পরিকল্পনা সম্প্রতি উন্মোচন করেছে ইসরাইলের নতুন সরকার। এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হলে ইসরাইলের পার্লামেন্টের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের রায়গুলোকে বাতিল করা সহজ হবে। তবে সমালোচকরা বলছেন, নেতানিয়াহু সরকারের এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরাইলের বিচারিক স্বাধীনতাকে পঙ্গু করবে, দুর্নীতিকে আরও উৎসাহিত করবে, সংখ্যালঘুদের অধিকার নষ্ট করবে এবং ইসরাইলের আদালত ব্যবস্থাকে বিশ্বাসযোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করবে। এছাড়া নতুন এই সংস্কার পরিকল্পনা ইসরাইলের চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেমকে হুমকির মুখে ফেলবে বলেও দাবি করে আসছেন বিক্ষোভকারীরা। রয়টার্স বলছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার সংস্কারের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে লক্ষ্যবস্তু করার পর জানুয়ারির প্রথম দিক থেকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার বিপুল সংখ্যক ইসরাইলি বিক্ষোভ করে আসছেন। মিডল ইস্ট মনিটর, রয়টার্স।