মাইমুনা আক্তার
এবারের রমজান এসেছে ভরা চৈত্র মাসে। যখন সারা দেশে গরমের দাবদাহ বেড়ে যায়। আর দাবদাহ থেকে মানুষের শরীরের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতি গরমে বদহজম, অতিহজম ইত্যাদির সমস্যা দেখা দেয়। সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা তো রয়েছেই। তাই গরমের দিনগুলোতে খাদ্যতালিকা নির্বাচনে সচেতন থাকা আবশ্যক।
বিশেষ করে সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে এমন কিছু খাওয়া উচিত নয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। শুধু রমজান নয়, বছরের যেকোনো সময়ই খাবার গ্রহণে অবশ্যই ভারসাম্য রক্ষা করা উচিত। আমাদের নবীজি (সা.)-ও খাবার গ্রহণে ভারসাম্য রক্ষা করতেন। তিনি পেট গরম করতে পারে এমন খাবার গ্রহণ করলে সঙ্গে তার ভারসাম্য রক্ষা করবে এমন খাবারও মিলিয়ে খেতেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে জাফর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) তাজা খেজুরের সঙ্গে শসা খেতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৩৫)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তরমুজ ফল তাজা খেজুরের সঙ্গে খেতেন এবং বলতেন, ‘আমি এর গরমকে ওর ঠাণ্ডার দ্বারা এবং এর ঠাণ্ডাকে ওর গরমের দ্বারা বিদূরিত করি।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৩৬)
অর্থাৎ খেজুর হজমের দিক থেকে একটি গরম খাদ্য, আবার তরমুজ ঠাণ্ডা। শুধু গরম বা ঠাণ্ডা শরীরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তাই নবীজি (সা.) দুটিকে মিলিয়ে খেতেন, যাতে তাদের ভারসাম্য রক্ষা হয়।
সম্ভবত আরবে এভাবে গরম ও ঠাণ্ডা প্রকৃতির খাবার মিলিয়ে খাওয়ার প্রবণতা আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। কেননা আয়েশা (রা.)-ও নবীজি (সা.)-এর বাড়িতে আসার আগে শসা ও খেজুর মিলিয়ে খেয়েছেন বলে বর্ণনা পাওয়া যায়। এবং এই খাবারটি খেয়ে সুস্বাস্থ্য লাভ করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আমার মায়ের ইচ্ছা ছিল আমাকে স্বাস্থ্যবতী বানিয়ে রাসুল (সা.)-এর কাছে পাঠাবেন। এ জন্য তিনি অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন; কিন্তু কোনো ফল হয়নি। শেষে তিনি আমাকে পাকা খেজুরের সঙ্গে শসা বা খিরা খাওয়াতে থাকলে আমি তাতে উত্তমরূপে স্বাস্থ্যের অধিকারী হই।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৯০৩)
আমরা চাইলে আমাদের সন্তানদের সুস্বাস্থ্যের জন্যও এই খাবারটি খাইয়ে দেখতে পারি। যেহেতু পবিত্র রমজানের কারণে এই দুটি জিনিস সহজলভ্য।পাশাপাশি নবীজি (সা.)-এর সুন্নত পালনের নিয়তে ইফতারে কিংবা ইফতারের বাইরে খাবার গ্রহণে ভারসাম্য বজায় রাখি। এতে ইনশাআল্লাহ সুন্নত পালনের সওয়াব ও শারীরিক সুস্থতা দুটিই পাওয়া যাবে।(সূত্র:কালের কণ্ঠ)