চরম দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে পঞ্চমবারের প্রচেষ্টায় সফল হলেন মুম্বইয়ের ওয়াদিবন্দরের বস্তিতে থাকা হুসেন সৈয়দ। হুসেন দারিদ্র্য ও কষ্টের মধ্যেও চালিয়ে গিয়েছিলেন পড়াশোনা। নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে সবরকম প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে ইউপিএসি পরীক্ষায় ৫৭০ তম স্থান অর্জন করেছেন।
উল্লেখ্য, হুসেন মুম্বাইয়ের যে অঞ্চলে থাকেন, সেখানে বেশিরভাগ লোক ডকে কাজ করেন। এর মধ্যে একটি বাড়ি রমজান সৈয়দেরও। রমজান সৈয়দ সৈয়দ হোসেনের পিতা। পেশায় ডকইয়ার্ডে শ্রমিক সুপারভাইজার। মঙ্গলবার ফলাফল প্রকাশের পর তাঁর বাড়িতে যেন চাঁদের হাট বসে। তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র মোহাম্মদ হুসেন ইউপিএসি সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা ২০২২ পাস করেছেন, যা দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চাকরি বলে বিবেচিত হয়। এবছর, দেশের ৯৩৩ জন ছাত্র ইউপিএসসি ২০২২-এর ফলাফলে সাফল্য পেয়েছেন।
মুহাম্মদ হোসেনের কৃতিত্ব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ, তিনি এই সাফল্যে পৌঁছাতে অনেক কঠিন সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধা অতিক্রম করেছেন।
হোসেন জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে ও আশেপাশে পড়াশোনার পরিবেশ একেবারেই ছিল না। মোহাম্মদ হোসেনের জীবনে শুধু একটি সমস্যাই ছিল না, তার দুর্বল অর্থনৈতিক অবস্থার পাশাপাশি ছিল জায়গার অভাবও। তা ছাড়া বাড়ির পরিবেশ পড়াশোনার অনুকূল ছিল না। একইসঙ্গে, সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার শুরুতে খুব কম তথ্য ছিল এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা ও সংস্থানেরও অভাব ছিল। এই সমস্ত চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে, ২৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ তাঁর পঞ্চম প্রচেষ্টায় ৫৭০-এর সর্বভারতীয় র্যাঙ্ক নিয়ে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হন।
হোসেন তাঁর নিজের পরিবারের প্রশংসা করে বলেন, এই যাত্রায় আমার পরিবার সবসময় আমাকে সমর্থন করেছিল। এমনকি ঘরোয়া সমস্যা থেকেও দূরে থাকার চেষ্টা করেছি যাতে পড়াশোনা থেকে আমার মনোযোগ বিঘ্নিত না হয়। হোসেন জানান, তিনি যখনই পরীক্ষা দিতে যেতেন, তাঁর বাবাও সঙ্গে থাকতেন।