মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের নান্তের শহরতলিতে পুলিশের গুলিতে খুন হন ১৭ বছরের কিশোর নাহেল মহম্মদ। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, আরব বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে নাহেলকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই অশান্তির আগুন ছড়িয়েছে গোটা ফ্রান্সে। এবার ফ্রান্সের প্রতিবেশি দেশ বেলজিয়ামেও নাহেল হত্যার প্রতিবাদ ছড়িয়েছে বলে খবর।
রাশিয়ার সরকারি সংবাদসংস্থা আরটি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রুসেলস শহরে নাহেল হত্যার প্রতিবাদ হিংসার রূপ নেয়। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। শুক্রবার অবধি ব্রুসেলস পুলিশ মোট ৬৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিক্ষোভকারীর সংখ্যা ৪৭। এর পাশাপাশি এক পুলিশ আধিকারিককে মাটিতে ফেলে মারধোরের অভিযোগে আটক হয় এক কিশোর। যদিও তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি।
আরটি‘র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে ব্রুসেলসের নানা প্রান্তে কম বয়সী বিক্ষোভকারীরা জমায়েত করে। সংখ্যায় তাঁরা ছিলেন কয়েক হাজার। প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে বিক্ষোভ সংগঠিত করেন তাঁরা। পুলিশ ধাওয়া করলে মুহূর্তের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যান বিক্ষোভকারীরা। কিছুক্ষণ পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠিক করা জায়গায় ফের জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলন ঠেকাতে কার্যত নাকাল হতে হয় ব্রুসেলস পুলিশকে।
প্রসঙ্গত, নাহেল হত্যার পর থেকে ফ্রান্সে টানা বিক্ষোভ চলছে। ফ্রান্সের পূর্বতন উত্তর আফ্রিকান কলোনিগুলির বহু আরব বংশোদ্ভূত মানুষ ফ্রান্সে বসবাস করেন। তাঁদের অভিযোগ, অভিবাসী হওয়ার ‘অপরাধে’ নিয়মিত প্রশাসনিক হেনস্থার শিকার তাঁরা। তাঁদের সংষ্কার, সংস্কৃতি, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস সহ সমস্ত কিছুকেই ফরাসি বর্ণবাদীরা তাচ্ছিল্যের চোখে দেখেন। এই অভিবাসীরা সিংহভাগই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। ফরাসি শ্বেতাঙ্গ খৃষ্টানরা এই কারণেও তাঁদের উপর বিরূপ বলে আরবি বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের অভিযোগ।
দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা এই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে নাহেল হত্যার ফলে। মলোটভ ককটেল, পাথর, লাঠি নিয়ে পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। ১ হাজারের উপর বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হলেও মঙ্গলবার থেকে চলা বিক্ষোভ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ফরাসি পুলিশ। প্যারিস ছাড়িয়ে মার্সেই’র মতো শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আগুন।
আরটি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফ্রান্সের বিক্ষোভের সামনের সারিতে রয়েছেন মূলত কিশোর এবং যুব সম্প্রদায়। অশান্তি ঠেকাতে ৪০ হাজার সামরিক পুলিশ মোতায়েন হয়েছে ফ্রান্স জুড়ে। মোতায়েন করা হয়েছে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী টাস্ক ফোর্সের জওয়ানদেরও। গণশক্তি