মণিপুর: বিজেপি সরকার গড়তে সমর্থন দিয়েছিল তৃণমূল

সারা দেশে প্রবল ধিক্কারের মুখে মণিপুরের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। মণিপুরের ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দায়ী এই বীরেন সিং-কে বিধানসভায় আস্থা ভোটে সমর্থন দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটিয়ে ২০১৭’তে সরকার গড়েন বীরেন সিং। ভোটে পিছিয়ে থেকেও পরে অন্য দলের সঙ্গে জোট করে সরকারে এসেছিল বিজেপি। সেই সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন টি রবীন্দ্র সিং। তিনিই আস্থা ভোটে সমর্থন জানিয়েছিলেন বীরেন সিং-কে, দলের নেতৃত্বের নির্দেশে।

৩ মে থেকে সরাসরি মণিপুরে দুই জনগোষ্ঠী মেইতেই এবং কুকিদের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষ চলছে। বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে বিজেপি’র একাংশেরও অভিযোগ, সরকার এবং প্রশাসন মদত জুগিয়ে চলেছে মেইতেইদের। অতি সম্প্রতি রাজ্যে দুই কুকি মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। ঘটনার ৭৪ দিন পরও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি বীরেন সিংয়ের পুলিশ। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি সরকার। তবে মণিপুরে বিপুল অংশ বলছে এমন জঘন্য অপরাধীরাও শাস্তি পাবে কিনা সন্দেহ। বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবিতে চলছে বিক্ষোভ। এই বীরেন সিং’কে সমর্থন জানিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জির দলের বিধায়ক।
মণিপুর যদিও একমাত্র নয়, ত্রিপুরাতেও কংগ্রেস ভাঙিয়ে একাধিক বিধায়ককে দলে টেনেছিল তৃণমূল। এঁরাই পরে বিজেপি’তে যোগ দেন। মণিপুরের ঘটনা চোখে পড়ার মতো এই কারণে যে তৃণমূল বিধায়ক জানিয়েছিলেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে বীরেন সিং-কে সমর্থন করেছেন। ২০২২’র নির্বাচনে এই বিধায়ক রবীন্দ্র সিং রাখঢাক না রেখে তৃণমূল ছেড়ে যোগ দেন বিজেপি’তে।

মণিপুরে বিধানসভায় আসন সংখ্যা ৬০। ২০১৭’তে কংগ্রেস পেয়েছিল ২৮ আসন। বিজেপি পায় ২১ আসন। তারপর চলে দল ভাঙানোর খেলা। এনপিপি এবং এনপিএফ’র ৪ জন করে বিধায়কের সমর্থন আদায় করে বিজেপি। এলজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের একজন করে বিধায়ক সমর্থন করেন বিজেপি’কে। রাজ্যে প্রথম বিজেপি সরকার গঠিত হয়।
রবীন্দ্র সিং সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যের পরিস্থিতি অনুযায়ী বিজেপি’কে সমর্থন দিয়েছি। দলের অনুমোদন রয়েছে এই সিদ্ধান্তে। তাঁর বক্তব্য ছিল রাজ্যের মানুষ টানা পনেরো বছর কংগ্রেসের শাসনে ক্লান্ত।’’
২০১৭’তে সমর্থনের পর তৃণমূল এতদিন মুখ খোলেনি। প্রায় ছ’বছরের পুরনো এই ঘটনা সামনে এসেছে মণিপুরের চলতি পরিস্থিতিতে। পশ্চিমবঙ্গেও বারবারই দেখা গিয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের যাতায়াত। সাম্প্রদায়িক মেরুকরণে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল বাবুল সুপ্রিয়ের বিরুদ্ধে। তিনি ছিলেন বিজেপি সাংসদ, মোদী সরকারের মন্ত্রী। দল বদলে তৃণমূলে যোগ দেন। উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয়কে কেবল প্রার্থী করেনি তৃণমূল, জয়ের পর মন্ত্রীও করা হয় রাজ্যের। (সৌজন্যে: গণশক্তি)

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও