নেতা মন্ত্রীদের মদতেই মঙ্গলাহাটে আগুন বলছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা

 

রাজ্য সরকার শত চেষ্টা করেও যখন মঙ্গলাহাটকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে পারছে না তখনই পরিকল্পনা করেই আগুন লাগানো হয়েছে বলে মনে করছেন আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকান মালিকদের একাংশ। তাদের দাবি পুড়ে যাওয়া হাটে বসেই ব্যবসা করবেন। রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অনুরোধ করেছেন পুড়ে যাওয়া জামা কাপড় তুলে পরিস্কার করে দিতে যাতে তারা নিজেরাই অস্থায়ী ভাবে দোকান ঘর তৈরি করে ব্যবসা করতে পারেন। শনিবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াতে মঙ্গলাহাটে আসেন আই এস এফ বিধায়ক নওসাদা সিদ্দিকী। বিধায়ককে কাছে পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা নানা অভিযোগ জানান।

হাওড়ার বাঁকড়ার পোষাক ব্যবসায়ী গোলাম সেখ আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে চলে আসেন। সামনেই শারদ উৎসব তাই জন্য চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে রেডিমেড পোষাক তুলেছিলেন। সবকিছু হারিয়ে এখন পথে বসেছেন তিনি। কিভাবে সবকিছু সামলাবেন তা ভেবেই পাচ্ছেন না। তাঁর অভিযোগ শাসক দলের নেতা মন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। একই অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীরা জানান শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের প্রত্যক্ষ মদতে জাতীয় সড়কের পাশে অঙ্কুরহাটিতে বড় বড় হাট কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে। এখনও সেভাবে অঙ্কুরহাটির হাটে ব্যবসা না হওয়ায় মঙ্গলা হাট তুলে দিতে চাইছে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা। তাদের আরও অভিযোগ লকডাউনের পর যখন সমস্ত কিছু স্বাভাবিক তখনও মঙ্গলা হাট খুলতে দেয়নি জেলা প্রশাসন। বিভিন্ন সভায় জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বলেছিলেন মঙ্গলা হাট এখানে না বসে যদি অন্যত্র বসে তাহলে সেখানে হাট খুলতে দেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও মেট্রো রেলকে সামনে রেখে হাওড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে হাট মালিক ও ব্যবসায়ীদের কাছে বলা হয়েছিল হাটের দিন পরিবর্তন করতে। কিন্তু তাতেও কোন কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। এদিন পোড়া হাটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আর কোন সাহায্য তাদের চাই না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এদিন দুপুরে মঙ্গলা হাটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কাছে যান বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন পরিকল্পনা করেই আগুন লাগানো হয়েছে। এখান থেকে হাট তুলে দিয়ে কয়েক বিঘা জমির উপর বহুতল নির্মাণ করতে চায় রাজ্য সরকার। জমি হাঙরদের নজর এই জমির উপর। সোমবার থেকে যাতে পুনরায় এখানেই হাট বসতে পারে তার ব্যবস্থা প্রশাসনকে করতে হবে বলে তিনি দাবি করেন। বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী বলেন রাজ্য সরকার মেলা, খেলার নাম করে কোটি কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে। তিনি দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন রাজ্য সরকারকে দিতে হবে।
শতাব্দী প্রাচীন হাওড়ার মঙ্গলা হাট। পুড়ে যাওয়া হাটটির মালিক ছিলেন কলকাতার ব্যবসায়ী দাঁ পরিবার। পরবর্তীতে দাঁ পরিবারের পক্ষ থেকে মিমানী গোষ্ঠীকে হাট চালানোর জন্য লিজ দেওয়া হয়। ১৯৮৭ সালে মিমানী হাটে আগুন লাগার ফলে মালিকপক্ষ পালিয়ে গেলে হাটের জমি আবারও নিজেদের হাতে নেন দাঁ পরিবার। ১৯৯০ সালে দাঁ পরিবারের পক্ষ থেকে হাট পরিচালনার জন্য শান্তি রঞ্জন দেব নামে এক ব্যবসায়ীকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়া হয়। এরপরই এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মিমানী গোষ্ঠী। সেই থেকেই এই হাটের জমি নিয়ে এখনও পর্যন্ত আদালতের বিচারাধীন। ( গণশক্তি)

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও