বর্তমানে ভারত তথা অসমে যে বিভাজনকামী রাজনীতি শুরু হয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাঙালি হিন্দুরাই। অসমের এনআরসি নবায়ন প্রক্রিয়া তো সবচেয়ে বেশি নাম বাদ গিয়েছে বাঙালি হিন্দুদেরই। এমন পরিস্থিতি ও পরিবেশে বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে সমন্বয় ও সম্প্রীতি বেশি করে গড়ে তুলতে হবে। এমনটা মনে করেন অসমের বিশিষ্ট আইনজীবী তথা নাগরিক রক্ষা কমিটির মুখ্য উপদেষ্টা হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী। অসমের নাগরিক পঞ্জির নবায়নে ১৩ লক্ষ বাংলাভাষী হিন্দুর নাম বাদ গিয়েছে। অথচ বিজেপি সরকার মুখে হিন্দুত্বের নাগরিকত্ব দেওয়ার বড়াই করে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন করেছে। এখনো পর্যন্ত সে আইনের বিধিই রচিত হয়নি। এছাড়া অসমে বাঙালি হিন্দুরাই বেশি মাত্রায় ডি ভোটার এবং সন্দেহভাজন বিদেশি নোটিশের শিকার হচ্ছেন। তীব্র হেনস্থা ও নির্যাতন চলছে বাঙালি হিন্দুদের উপরেই। এসব কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে হাফেজ রশিদ সাহেব বলেন, দেশভাগের বলি হিন্দু, বাঙালির নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে কোন শর্ত আরোপ করা বা ভিত্তিবর্ষের নির্ধারিত সীমারেখায় বন্দি করা উচিত নয়। বিজেপি সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ কোনভাবেই হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব প্রদানের গ্যারান্টি দেয়না বলে মনে করেন গোহাটির হাইকোর্টের এই প্রবীণ আইনজীবী। কারণ নাগরিকত্বের আইনের সঙ্গে বাংলাদেশে তাদের সঙ্গে কোন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বা হিংসার ঘটনা ঘটেছে, এমন প্রমাণ দিতে হবে। তাকে প্রমাণ করতে হবে তিনি উদ্বাস্ত। এক্ষেত্রে সরকারকে এমন নিয়ে চালু করতে হবে যে, দেশভাগের বলি হিন্দু বাঙ্গালীরা যাতে একটি এফিডেভিড কিংবা সেলফ ডিক্লিয়ারেশনের মাধ্যমেই নাগরিকত্ব পেতে পারেন। অসমের ভাষাগত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য এক ‘কমন মিনিমান’ প্রোগ্রাম প্রস্তুত করার কথাও তিনি বলেন। এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে হাফেজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন, অসমের বাঙালিরা কোনদিনই বিদেশে নয়। ব্রিটিশ আমল থেকেই বরাক উপত্যকার কাঁছাড় ও গোয়ালপাড়া জেলা অসমের সঙ্গে যুক্ত। প্রাকৃতিকভাবেই বাঙালিরা ভূমিপুত্র। (সৌজন্য – পূবের কলম)