বন্দে ভারতে ‘ গলদ’, চড়া ভাড়ায় জোড়াতাপ্পির রেকে সফর, হাওড়া এনজেপি রুটে তুমুল বিক্ষোভ

 

 

আবারও যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। আর সেই কারণে শুক্রবার ভোরে একেবারে শেষ মুহূর্তে বদলে দেওয়া হয় হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি রুটের এই সেমি হাইস্পিড ট্রেনের রেক। চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হলেন যাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত চড়া ভাড়া দিয়েও জোড়াতাপ্পি দেওয়া সাধারণ কোচের ট্রেনে সফর করতে তাঁরা বাধ্য হন। এর জেরে হাওড়া-এনজেপি রুটের উভয় দিকেই তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েন রেলের কর্মী ও আধিকারিকরা।
হাওড়া স্টেশন সূত্রে খবর, এদিন ভোরে ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের সামান্য আগে যাত্রীদের জানানো হয়, বন্দে ভারতে যান্ত্রিক গোলযোগ ধরা পড়েছে। তাই সেটি যাবে না। বিকল্প ট্রেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সকাল ৭টা নাগাদ সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে তা দেওয়া হয়। যাত্রীরা একপ্রকার বাধ্য হয়ে সেই ট্রেনে ওঠেন। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বাতিল হওয়ায় হাওড়া স্টেশনেই দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও। ওই ট্রেনে তাঁর মালদহ যাওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত সাধারণ এসি কামরায় চড়তে বাধ্য হন তিনি। সাধারণ সিটের উপর তোয়ালে পেতে রাজ্যপালের জন্য ‘বিশেষ’ ব্যবস্থা করা হয়। যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের অন্যান্য কামরাগুলি দীর্ঘদিনের পুরনো। সিট, বাথরুম ও খাবারের ব্যবস্থাও অত্যন্ত নিম্নমানের। অনেকে পানীয় জলও পাননি। বেশি টাকা দিয়ে বন্দে ভারতের টিকিট কেটে কেন এভাবে যেতে হবে? এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগরে দেন সিংহভাগ যাত্রী। ওই ট্রেনেই ছিলেন খ্যাতনামা বাচিকশিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও স্যোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দেন। এই ট্রেনটিই দুপুরে আবার নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ফিরতি বন্দে ভারতের যাত্রীদের নিয়ে রওনা হয়। সেখানেও বিষয়টিকে রেলের প্রতারণা বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ছিল তুঙ্গে।
হাওড়াগামী ট্রেনের যাত্রী দিপালী সরকার বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী। সাত ঘণ্টায় হাওড়া পৌঁছে যাব বলেই বন্দে ভারতের টিকিট কেটেছিলাম। কিন্তু, এই দুর্ভোগে না অসুস্থ হয়ে পড়ি।’ আর এক যাত্রী দীপঙ্কর সরকারের সাফ কথা, ‘আগে জানালে টিকিট বাতিল করতাম। এত টাকা দিয়ে টিকিট কেটে সাধারণ কোচে যাওয়া—এটা প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়।’ অপর যাত্রী পিয়ালী ঘোষ আরও উত্তেজিত, ‘এগজিকিউটিভ ক্লাসে দু’জন ছ’হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছি। সেখানে যেতে হবে সাধারণ কোচে! ভবিষ্যতে আর বন্দে ভারতের টিকিট কাটব না।’
পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম সঞ্জীবকুমার অবশ্য জানিয়েছেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে মূল অগ্রাধিকার। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিকল্প ট্রেনের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল। ওই ট্রেনে বন্দে ভারতের মতোই সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে।’ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘বন্দে ভারতের রেকে একেবারে শেষ সময়ে ত্রুটি ধরা পড়ে। তাই অন্য কোনও উপায় ছিল না।’
জোড়াতাপ্পির রেক ঘিরে শুক্রবার এনজেপি স্টেশনে বিক্ষোভ।
(সৌজন্যে: বর্তমান পত্রিকা)

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও