মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা (ডিরেক্টর অব সিকিউরিটি ইউনিট) কমান্ডো বাহিনীর এক সদস্যের ‘রহস্যজনক মৃত্যু’র ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বুধবার রাতে কল্যাণীর কাছে সাহেববাগানে রানাঘাট জিআরপি থানা এলাকায় রেল লাইনের পাশ থেকে ওই কমান্ডোর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁর নাম ইসরাফিল সাহাজি (৩২)। বাড়ি নদীয়ার মদনপুর-১ নম্বর পঞ্চায়েতের জঙ্গল গ্রামে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বুধবার বিকেলে মদনপুরের বাড়ি থেকে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাত ১০টা বেজে গেলেও, তিনি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন। বারবার মোবাইলে ফোন করা হলেও, তিনি ফোন ধরেননি। লাগাতার ফোন করতে থাকেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর রাত ১২টা নাগাদ ইসরাফিলের মোবাইলে ফোন করা হলে, কল্যাণী জিআরপির তরফে একজন জানান, রেললাইনের ধারে ইসরাফিলের মৃতদেহ মিলেছে। এখন তা রয়েছে রানাঘাট জিআরপিতে। সেখানেই গিয়েই পরিবারের লোকজন মৃতদেহটি শনাক্ত করেন। ঘটনাটি খুন, দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রানাঘাট জিআরপি।
ইসরাফিলের পরিবারে তাঁর মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তাঁর স্ত্রী করিশ্মা সাহাজি বলেন, বিকেলে চা খেয়ে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ফোনে একবার কথা হয় আমার সঙ্গে। তখন বলেছিলেন, একটু পরেই বাড়ি ফিরে আসছি। তারপর থেকে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। রাতে ওর মৃত্যুর খবর পাই। ওঁর কোন শত্রু ছিল বলে আমার জানা নেই। ইসরাফিলের পিসতুতো ভাই মনিরুল মীরের কথায়, প্রচণ্ড মানসিক শক্তি, আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাছাড়া যেভাবে মৃতদেহটি পড়েছিল, তাতে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না। যদিও রানাঘাট জিআরপি সূত্র বলছে, কল্যাণীর স্টেশন ম্যানেজার তাদের জানিয়েছে, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি) থেকে কমান্ডো ট্রেনিং প্রাপ্ত ইসরাফিল রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মুখ্যমন্ত্রীর সফরপর্বে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকতেন। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতেও ডিউটি করেছেন তিনি। রাজ্য সশস্ত্র পুলিসের সেকেন্ড ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল পদে ২০১১ সালে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে নিজের কর্মদক্ষতায় মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বাহিনীর অন্যতম সদস্য হয়ে উঠেছিলেন ইসরাফিল। এহেন এক পুলিস কমান্ডোর মৃত্যুকে ঘিরে সহকর্মীদের মধ্যে গভীর শোকের আবহ তৈরি হয়েছে। (সৌজন্যে: বর্তমান পত্রিকা)