মাদ্রাজ হাইকোর্ট শুক্রবার তামিলনাড়ুর ধর্মপুরি জেলার ভাচাথি গ্রামের আদিবাসীদের বিরুদ্ধে হওয়া ১৯৯২ সালের গণ-অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় পুলিশ এবং বন বিভাগের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সহ মোট ২১৫ জন দোষীর দায়ের করা সমস্ত আপিল খারিজ করে দিয়েছে।
শুক্রবার, মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি পি ভেলমুরগান অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। ২০১১ সালে এই আবেদনকারীদের একটি জেলা দায়রা আদালত দোষী সাব্যস্ত করে এবং তৎকালীন জেলা কালেক্টর, জেলা বন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়। আদালতের ওই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন অভিযুক্তরা।
বিচারপতি ভেলমুরুগান তামিলনাড়ু সরকারকে ১৯৯২ সালে ধর্ষিত ১৮ জন মহিলাকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দেন৷ আদালতের রায়, ক্ষতিপূরণের অর্ধেক অর্থ ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্তদের দেওয়া উচিত৷ অভিযানের সময় যে গ্রামবাসীদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের চাকরি দেওয়ার জন্যও আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।
ভাচাথি মামলাটি একটি গণ অপরাধের সাথে জড়িত যা ২০ জুন ১৯৯২ তারিখে ধর্মপুরী জেলার ভাচাথি গ্রামে ঘটেছিল। ১৫৫ জন বনকর্মী, ১০৮ জন পুলিশ এবং ছয়জন রাজস্ব কর্মকর্তার একটি দল আদিবাসী অধ্যুষিত ভাচাথি গ্রামে প্রবেশ করে, পাচারকৃত চন্দন কাঠের সন্ধান করতে এবং বীরাপ্পন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে। তল্লাশি চালানোর অজুহাতে, দলটি গ্রামবাসীদের সম্পত্তি লুটপাট করে, তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে, তাদের গবাদি পশু হত্যা করে, প্রায় ১০০ গ্রামবাসীকে লাঞ্ছিত করে এবং কমপক্ষে ১৮ জন নারীকে ধর্ষণ করে।
প্রাথমিকভাবে, মাদ্রাজ হাইকোর্ট ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) দ্বারা দায়ের করা একটি পিটিশন খারিজ করে দিয়ে বলে যে সরকারি কর্মকর্তারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে না। পরে, সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টকে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। এরপর হাইকোর্ট সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, একটি বিশেষ আদালত এসসি/এসটি প্রিভেনশন অফ অ্যাট্রোসিটি অ্যাক্টের অধীনে ২৬৯ জন অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে এবং ১৭ জনকে ধর্ষণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সময় মূল অভিযুক্তদের মধ্যে ৫৪ জন মারা গিয়েছিল। বাকি ২১৫ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পুরো ঘটনাটি নিয়ে ভাচাথি নামে একটি চলচ্চিত্রে তৈরি করা হয় যেখানে দেখানো হয়, বীরাপ্পানকে ধরার অভিযানের পটভূমিতে, বিশেষ টাস্ক ফোর্স পুলিশ দ্বারা অনেক নৃশংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। এস. বালামুরুগানের লেখা তামিল উপন্যাস সোলাগার থোটি একই কথা প্রকাশ করেছে। ভেট্রিমারানের ফিল্ম বিদুথালাই পার্ট ওয়ানও একই ঘটনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়।
সূত্র: মকতুব মিডিয়া