মধ্যপ্রদেশের কুকশীতে গণপতি মিছিল চলাকালীন সংখ্যালঘু মুসলিমদের দোকানে হামলার অভিযোগ

 

বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর মধ্যপ্রদেশের ধর জেলার কুকশী শহরে গণপতি বিসর্জন মিছিল চলাকালীন হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি সংখ্যালঘু মুসলমানদের দোকানে আগুন, লুটপাট এবং গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।মকতুব মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনটি ভিন্ন এলাকা থেকে তাদের পৃথক গণপতি শোভাযাত্রা বের হয়ে বাস স্ট্যান্ড হয়ে প্যাটেল চকের এক মোড়ে গিয়ে থামে। এই তিনটি দলের মধ্যে করা বিসর্জনের জন্য আগে পৌঁছবে তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যার ফলে, প্রধান বাজারে একটি পদদলিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। তিনটি গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ধারের পুলিশ সুপার মনোজ সিং এবং কালেক্টর প্রিয়াঙ্কা মিশ্র কুকশীতে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

অভিযোগ, এরপর, কিছু সময়ের জন্য মীমাংসা হলেও খানিকক্ষণের মধ্যেই বিষয়টি একটি সাম্প্রদায়িক মোড় নেয়। অভিযোগ, হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি ডিজের ব্যবহার করে উস্কানিমূলক গান বাজায় এবং গভীর রাতে একটি মসজিদের সামনে সাম্প্রদায়িক স্লোগান দেয় এবং পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। মোট ৯টি দোকানে হামলা হয়, যার মধ্যে ৪টি দোকানে আগুন লাগানো হয়েছে ও ৫টি দোকানে লুটপাট করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলির বেশিরভাগই ছিল মুসলমানদের দোকান। তবে, আশেপাশের অন্যান্য দোকানগুলি যেগুলি মূলত, হিন্দুদের দোকান সেগুলিতে কোনও আঘাত করা হয়নি।
মোহাম্মদ ইদ্রিস খান নামের একজন বাসিন্দা মকতুব মিডিয়াকে বলেছেন, “ওরা(হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলি) ইতিমধ্যেই মসজিদের বাইরে গান বাজাচ্ছিল-নাচছিল এবং ‘টোপিওয়ালা জয় শ্রী বোলেগা’ ও ‘হর ঘর ভগওয়া ছায়েগা’-এর মতো উত্তেজক স্লোগান দিচ্ছিল।” ইদ্রিস খান আরও বলেন, “প্রথমে গন্তব্যে পৌঁছানো নিয়ে তিনটি দলের মধ্যে মারামারি হয় এবং তাদের মধ্যে একটি দল অন্য দলকে মসজিদের দিক থেকে আসছে ভেবে তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। এরপরই তারা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং মসজিদে পাথর ছুঁড়তে থাকে।”
পুরো ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “তাদের বিভ্রান্তির কারণে হাঙ্গামা সৃষ্টি হয়, যার ফলে আগুন লাগে এবং এর সুযোগ নিয়ে তারা মুসলমানদের দোকান পুড়িয়ে দেয় ও লুট করে।” তিনি আরও বলেন, “সব সময় মুসলমানরা তাদের উৎসবের সময় অর্থনৈতিক ও শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সৌভাগ্যক্রমে, কেউ আহত হয়নি”।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, “দুটি পৃথক অভিযোগ একটি বাসিন্দাদের দ্বারা এবং অন্যটি এক দোকানের মালিকের দ্বারা করা হয়েছিল, যার দোকান এবং জিনিসপত্রে আগুন লেগেছিল, তবে পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনও এফআইআর নথিভুক্ত করেনি।”
পুলিশ আধিকারিকদের মতে, গণেশ চতুর্থীর চূড়ান্ত মিছিলের সময় একটি হাতাহাতির মতো পরিস্থিতি ঘটেছিল রুট নিয়ে তিনটি গ্রুপ ঝগড়া করেছিল এবং পুলিশ আসার সাথে সাথে এটি মিটে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, “মধ্যরাতে চতুর্থী উদযাপনের সময়, কিছু দুর্বৃত্ত পাথর ছুঁড়েছে। দুর্বৃত্তরা দোকানে আগুন দিয়েছে, গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে এবং একটি মোবাইলের দোকান লুট করেছে”। পুলিশ আরও জানিয়েছে, “আমরা ঘটনার তদন্ত করছি এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“

সূত্র: মকতুব মিডিয়া

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও