বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই ভারতে ঘৃণা ও সহিংসতার সবচেয়ে বড় উৎপাদক, মন্তব্য সাংবাদিক আরফা খানম শেরওয়ানির

 

দিল্লি-ভিত্তিক সাংবাদিক আরফা খানম শেরওয়ানি রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ মুসলিম মজলিস-ই-মুশাওয়ারাত (ডব্লিউবিএমইএম) সিম্পোজিয়াম- ভায়োলেন্স ফ্রি ইন্ডিয়া: দ্য ওয়ে ফরওয়ার্ড-এ বলেন, দেশে ঘৃণা ও সহিংসতার সবচেয়ে বড় প্রযোজক, পরিচালক এবং অভিনেতা ভারত সরকার নিজেই। তিনি আরো বলেছিলেন, “আমার কাছে এটি সমর্থন করার প্রমাণ রয়েছে।  একজন সাংবাদিক হিসেবে, আমার বক্তব্যকে সমর্থন করার জন্য তথ্য ও পরিসংখ্যান রাখাই আমার কাজ।”
দিল্লি-ভিত্তিক সাংবাদিক আরও বলেন,“হিন্দুত্ব ওয়াচের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ভারতে ২৫৫টি ঘৃণ্য বক্তব্যের ঘটনা ঘটেছে। আর এর ৮০ শতাংশই ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত রাজ্যে।
আরফা ওয়াশিংটন পোস্টের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেন,“সংগঠনটি ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত এবং ফিল্ড থেকে রিপোর্ট করে না। সুতরাং, তারা শুধুমাত্র নথিভুক্ত ঘটনা উল্লেখ করেছে। এর মানে, মামলা আরও বেশি হতে পারে। সরকার ২০১৭ সালে এই ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা বন্ধ করে দিয়েছে”। আরফা ওয়াশিংটন পোস্টের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের উল্লেখ করে আরও বলেন, ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কর্ণাটক নির্বাচনের সময় ঘৃণা বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের একটি অংশ ছিল। মুসলমান ও কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর জন্য অন্তত দেড় লাখ লোককে কাজে লাগানো হয়েছিল এবং জনগণকে বলা হয়েছিল যে তারা যদি বাঁচতে চান, তাহলে তাঁদের বিজেপিকে ভোট দিতে হবে। তিনি আরও বলেন,“ভারতের প্রতিটি সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর কাজ করার জন্য তাদের নীতি এবং এজেন্ডা রয়েছে। এই সরকারের শুধুমাত্র ঘৃণা ও সহিংসতা ছড়ানোর এজেন্ডা রয়েছে”।
আরফার আগে, প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার সদস্য এবং বরিষ্ঠ সাংবাদিক জয়শঙ্কর গুপ্ত দাবি করেন যে, তিনি নরেন্দ্র মোদীর মতো বোকা এবং মিথ্যাবাদী প্রধানমন্ত্রী দেখেননি। নিজের এই বক্তব্যের সমর্থন করতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অনেক বিবৃতি উদ্ধৃত করেন তিনি। সাংবাদিক গুপ্তের দাবি “আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য কী, গুজরাট দাঙ্গা না হলে তিনি কোথায় থাকতেন? আমি নিশ্চিত করতে পারি যে বিশ্বের কোথাও এমন বোকা প্রধানমন্ত্রী নেই”।
প্রবীণ সাংবাদিক উল্লেখ করেন, “তিনি বলেছিলেন বিহারের নালন্দা ও তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়। তক্ষশীলা পাকিস্তানে। একই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সিকান্দার তার দ্বীন-ই-ইলাহী সহ এখানেই গঙ্গায় ডুবে যায় কিন্তু, সিকান্দার কখনোই এই অংশে আসেননি এবং দ্বীন-ই-ইলাহী আকবর তৈরি করেছিলেন, সিকান্দার নয়”। সাংবাদিক গুপ্ত আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি তার রাজনৈতিক পিতার সম্পর্কেও ভালো জানেন না। তিনি(প্রধানমন্ত্রী মোদি) বলেন, শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায় লন্ডনে যেতেন এবং সেখানে বিবেকানন্দের সঙ্গে আলোচনা করতেন। তার মিথ্যাচারের ওপর একটা আস্ত বই লেখা যায়। এমনকি তিনি(প্রধানমন্ত্রী মোদি) বলেছিলেন যে গুরু গোরক্ষনাথ, কবির এবং গুরুনানক বৌদ্ধিক আলোচনা করতেন  কিন্তু, তাঁদের অস্তিত্বের মধ্যে ২০০ বছরের পার্থক্য রয়েছে”।
প্রবীণ সাংবাদিক আরও বলেন, “তিনি (প্রধানমন্ত্রী মোদি) এমনকি সংসদের ভিতরেও মিথ্যা বলেছেন। তিনি বলেন, ইন্দিরা গান্ধী ও বেনজির ভুট্টোর মধ্যে সিমলা চুক্তি হয়েছিল কিন্তু কোনো বিরোধী নেতা তাঁকে জবাব দেননি যে তখন বেনজিরের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। সম্প্রতি, তিনি বলেছিলেন যে দারভাঙ্গায় এইমস শুরু হয়েছে, এখনো পর্যন্ত এর কোন অস্তিত্বই নেই ওই জায়গায়”।

সূত্র: ইনিউজরুমডটইন

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও