অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট অফ আসামের প্রধান মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি এবং ডাকাতির মতো অপরাধে মুসলমানদেরকে এক নম্বরে বর্ণনা করেছেন। হিন্দি দৈনিক পত্রিকা দৈনিক ভাস্করের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০ অক্টোবর অসমে এক অনুষ্ঠানে বদরুদ্দিন আজমল বলেন, কারাগারে যাওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা এক নম্বরে আছি। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পরেও নিজের বক্তব্যে অটল রয়েছেন তিনি। শুক্রবার একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি ভুল কিছু বলিনি। অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভ্যাস শিক্ষার অভাবের সাথে সরাসরি জড়িত। আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার সময় নেই, কিন্তু জুয়া খেলার সময় আছে।
দৈনিক ভাস্করের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বদরুদ্দিন আজমল, আসামের গোয়ালপাড়ায় ২০ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষার অভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই কারণে মুসলমানরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, চুরি, ডাকাতি, ডাকাতি, ধর্ষণ ইত্যাদি অপরাধে আমরা এক নম্বরে আছি। জেলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও আমরা নাম্বার-১। আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার সময় নেই, কিন্তু জুয়া খেলা এবং মানুষকে ঠকানোর জন্য অনেক সময় আছে। এসব অন্যায় কাজে কারা জড়িত, মুসলমানরা জড়িত। এটি একটি দুঃখজনক বিষয়। তিনি আরও বলেন, মানুষ চাঁদ-সূর্যে যাচ্ছে, আর আমরা জেলে গিয়ে পিএইচডি করছি। যে কোন থানায় যান, দেখবেন কারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ-আব্দুর রহমান, আব্দুর রহিম, আব্দুর মজিদ, বদরুদ্দিন, সিরাজুদ্দিন, ফখরুদ্দিন – এটা কি দুঃখজনক নয়?
নিজের বক্তব্যে অটল বদরুদ্দীন আজমল শুক্রবার একটি নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষার অভাব দেখেছি। আমি অনেকবার বলেছি, আমাদের ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে না, উচ্চশিক্ষা নেয় না, এমনকি ম্যাট্রিকুলেশনও করে না। তরুণদের শিক্ষার গুরুত্ব জানাতে অপরাধে ১ নম্বর হওয়ার কথা বলেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, মুসলিম সমাজের উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে বড় কারণ এখানে শিক্ষার অভাব। আমরা শিক্ষা নিয়ে সরকারকে দোষারোপ করি, কিন্তু তারা আমাদের সংখ্যালঘু এলাকা থেকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার চাইলে আমরা দিতে পারি না। আমাদের শিক্ষার হার বাড়াতে হবে। এর জন্য আমাদের তরুণদের পড়াশোনায় উৎসাহিত করতে হবে। শিক্ষার অভাবই সকল অনিষ্টের মূল।
শুধু তাই নয়, বদরুদ্দিন আজমল আরও বলেন, যেসব ছেলে মেয়েদের দেখে উত্তেজিত হয়, আমি তাদের বলতে চাই যে ইসলাম বলেছে আচরণ করার সঠিক উপায় আছে। আমরা যখন বাজারে বা জনসমক্ষে থাকি এবং সেখানে নারীদের দেখি, তখন আমাদের দূরে তাকানো উচিত। ছেলেদের মনে রাখতে হবে তাদের ঘরেও নারী আছে, তারা যদি তাদের মা-বোনের কথা চিন্তা করে তাহলে তাদের মনে কখনো ভুল চিন্তা আসবে না।
প্রসঙ্গত, বদরুদ্দিন আজমল আসামের একজন ব্যবসায়ী। তিনি জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের অসমের সভাপতি। ২০০৫ সালে এআইইউডিএফ প্রতিষ্ঠার পর থেকে তিনি এরও সভাপতিত্ব করছেন। ২০০৯ সালে তিনি ধুবরি থেকে লোকসভা সাংসদ হন। উল্লেখ্য, অসমের ১২৬ আসনের বিধানসভায় এআইইউডিএফ-এর ১৫টি আসন রয়েছে। অসমের বাংলাভাষী মুসলমানদের মধ্যে আজমলের গভীর প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়।