একটি ২০ সদস্যের টিম রবিবার কেরালার এর্নাকুলামের কনভেনশন সেন্টারে ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক বিস্ফোরণের তদন্ত করবে। দৈনিক ভাস্করে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। এর মধ্যে একটি ১২ বছর বয়সী মেয়েও রয়েছে, যে গভীর রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মারা যায়। এই বিস্ফোরণ কান্ডে আহত হয়েছেন ৪১ জন। এদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জের মতে, ১৭ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন আইসিইউতে এবং ৩ জন ভেন্টিলেটরে রয়েছেন। ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়েছেন, এডিজিপি আইন শৃঙ্খলার নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল এই ঘটনার তদন্ত করবে। তদন্তকারীদের টিমে ২০ জন সদস্য থাকবেন। দুর্ঘটনা নিয়ে আজ সর্বদলীয় বৈঠকও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে, রাজ্যের এডিজিপি (আইন শৃঙ্খলা) অজিত কুমার বলেছেন, একজন ব্যক্তি কোদাকারা থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন যে, তিনিই কনভেনশন সেন্টারে বোমাটি পুঁতে রেখেছিলেন। অভিযুক্তের নাম ডমিনিক মার্টিন। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দৈনিক ভাস্করের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিস্ফোরণের আগে ফেসবুক লাইভ করেছিল অভিযুক্তরা। পুলিশ স্টেশনে আত্মসমর্পণের আগে সেই ভিডিও পোস্ট করেন ডমিনিক মার্টিন।
কেরালা পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে বোমাটি মার্টিন বসিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁর ফোন থেকে আইইডি বিস্ফোরণে ব্যবহৃত রিমোট কন্ট্রোলের ভিজ্যুয়াল খুঁজে পেয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আত্মসমর্পণের আগে ডমিনিক ফেসবুক লাইভ করেছিলেন। তাতে তিনি বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করেছেন।
নিজের এই কাজ করার কারণও জানিয়েছেন ডমিনিক। তিনি ফেসবুকে লাইভে এসে বলেছেন, তিনিও খ্রিস্টান ধর্মের যিহোবা’স উইটনেস গ্রুপের অন্তর্গত, কিন্তু তিনি তাদের মতাদর্শ পছন্দ করেন না। এরা দেশের তরুণদের মনকে বিষিয়ে তুলছে বলে তিনি তাদের দেশের জন্য হুমকি মনে করেন। তাই তিনি তাদের প্রার্থনা সভায় বোমা ফাটিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, প্রার্থনা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কনভেনশন হলে তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। যিহোবা’স উইটনেস ইনস্টিটিউটের স্থানীয় মুখপাত্র টিএ শ্রীকুমার বলেন, কনভেনশন হলে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে প্রার্থনা শেষ হওয়ার পর হলের মাঝখানে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে। কয়েক সেকেন্ড পর হলের দুপাশে আরও দুটি বিস্ফোরণ ঘটে। এর্নাকুলামে যে স্থানে বিস্ফোরণটি হয়েছিল তার আশেপাশে ইহুদি সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক লোকের বসবাস।
কেরালার ডিজিপি শেখ দারভেশ জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, আইইডি একটি টিফিন বক্সে লাগানো হয়েছিল এবং কনভেনশন সেন্টারের ভিতরে রাখা হয়েছিল। তদন্তের জন্য আটটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ তদন্তের পর আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।