দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া জোটের চতুর্থ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে। এই বৈঠকে জোটের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জানা যাচ্ছে যে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গকে বিরোধী জোটের মুখ করার প্রস্তাব করেছিলেন। যাকে সমর্থন করেছেন আদমি পার্টির আহ্বায়ক ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তবে মল্লিকার্জুন খাড়গেকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, জয়ের পরেই প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘প্রথমে জয়ী হতে হবে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হবে, তবেই সংসদ সদস্যরা গণতান্ত্রিকভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন যে শাসন করার জন্য তাদের চেয়ে ভাল আর কেউ নেই। আমরা সেই চিন্তার প্রতিহত করব।
বৈঠকের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ২৮টি দল চতুর্থ বৈঠকে অংশ নিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করেছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে সব দল মিলে ৮ থেকে ১০টি বৈঠক করবে। আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, তামিলনাড়ু, কেরালা, তেলেঙ্গানা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি বা পাঞ্জাব হোক না কেন আসন ভাগাভাগির সমস্যাগুলি সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, রাজ্য স্তরে আসন বণ্টন হবে, কোনও সমস্যা থাকলে কেন্দ্রীয় স্তরে তা সমাধান করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, আমরা সংসদ সদস্যদের বরখাস্তকে অগণতান্ত্রিক বলে একটি প্রস্তাব পাস করেছি। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে এবং আমরা সবাই এর জন্য প্রস্তুত। নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা আমরা সংসদে উত্থাপন করেছি। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিবৃতি দাবি করছি কিন্তু তারা প্রস্তুত নয়। তিনি আরও বলেন, এই প্রথম ১৫১ জন সংসদ সদস্যকে বরখাস্ত করা হলো। আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করব, এটা অন্যায়। এর বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ২২ ডিসেম্বর সাংসদদের সাময়িক বরখাস্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব।
বৈঠকের পরে সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব বলেছেন, আসন ভাগাভাগির কাজ শীঘ্রই হবে। আমরা একজোট হয়ে বিজেপিকে পরাজিত করব। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রথমে সংসদ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি উত্থাপন করা হবে কারণ এটা গণতন্ত্রের ওপর হামলা। এটা আমাদের সংসদীয় ব্যবস্থার ওপর আক্রমণ। তাই সারাদেশে বিক্ষোভ হওয়া উচিত। এ নিয়ে বড় ধরনের বিক্ষোভ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীর বিষয়ে এখনও কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি। ২২ ডিসেম্বর সমস্ত রাজ্য সদর দফতরে বড় বিক্ষোভ হবে। আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আসন ভাগাভাগির ব্যবস্থা করব। আমাদের একসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
কংগ্রেস পার্টির সাংসদ এবং সাধারণ সম্পাদক কেসি ভেনুগোপাল বলেছেন, এই বৈঠকটি অত্যন্ত সফল ছিল। সবাই খোলাখুলি কথা বলেছেন। এখন ফোকাস হচ্ছে আসন ভাগাভাগির দিকে। অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিন্তু প্রতিটি বিষয় এক দিনে আলোচনা সম্ভব নয়। শিগগিরই আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু করা উচিত। বৈঠকে উপস্থিত সিপিআই (এমএল) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, বৈঠকে ইভিএমের বিষয়টিও উত্থাপিত হয়েছিল। বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলব।