কেন্দ্রীয় সরকারের মিড ডে মিল প্রকল্পের রন্ধনকর্মীদের প্রতি দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গ মিড-ডে মিল কর্মী ইউনিয়ন, পশ্চিমবঙ্গ সংগ্রামী রন্ধনকর্মী ইউনিয়ন, সারা বাংলা মিড-ডে মিল কর্মী ইউনিয়ন, অ্যাসোসিয়েশন অফ মিড-ডে মিল অ্যাসিস্ট্যান্টস্ এবং পশ্চিমবঙ্গ স্বরোজগারী ও রাঁধুনি ইউনিয়ন
একত্রিত হয়ে “মিড ডে মিল কর্মী ঐক্য মঞ্চ” গঠন করেছে।
মঞ্চটি এক বিবৃতিতে বলেছে, আমাদের রাজ্যে মিড ডে মিল প্রকল্পের অধীনে প্রায় ২ লক্ষ ৩৩ হাজার পদ সৃষ্ট হয়েছে। কিন্তু এই ২লক্ষ ৩৩ হাজার পদ থাকলেও প্রতিটি পদের পিছনে এক বা একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাজ করার ফলে ৭ থেকে ৮ লক্ষ রন্ধনকর্মী সরকার অনুমোদিত বিদ্যালয়গুলিতে অতি স্বল্প মজুরিতে কাজ করছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প হলেও কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের যৌথ আর্থিক দায়িত্বে এই প্রকল্প চালানো হয়। ২০১৪ সালে দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেই বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্পের বরাদ্দ ৭৫% থেকে কমিয়ে ৬০% করেছে এবং কেন্দ্রীয় সরকার সারা দেশে মিড ডে মিল রন্ধনকর্মীদের জন্য প্রতি মাসে ১০০০ টাকা মঞ্জুরি ১০ মাসের জন্য বরাদ্দ করেছে। এই ১০০০ টাকার মধ্যে ৬০০ টাকা কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার ৪০০ টাকা ও তার সঙ্গে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিয়ে মোট ১৫০০ টাকা মজুরি ২০১৩ সাল থেকে এই রাজ্যের মিড ডে মিল কর্মীদের জন্য বরাদ্দ করেছে। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকার গত ১০ বছর ধরে এই কর্মীদের প্রতি চরম বঞ্চনা করে চলেছে। দেশের বেশ কিছু রাজ্য সরকার তাদের রাজ্য তহবিল থেকে রন্ধনকর্মীদের অতিরিক্ত মজুরি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিল বাবদ অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করছে।
সংগঠনগুলি বলছে, ছাত্র-ছাত্রী পিছু সরকার নির্দেশিত বরাদ্দ ছাড়াও অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে অন্ধ্রপ্রদেশে ৫ দিন ডিম ও প্রতিদিন মিষ্টি, কেরালাতে ১দিন ডিম ও ২দিন দুধ, কর্নাটকে ৪দিন ডিম এবং যারা ডিম খায় না তাদের কলা ও প্রত্যেকদিন মিষ্টি দেওয়া হয়। আমাদের রাজ্যের রন্ধনকর্মীদের ন্যূনতম মজুরী প্রদান ও ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক পুষ্টির প্রদানের উদ্দেশ্যে বরাদ্দ বৃদ্ধি করার জন্য রন্ধনকর্মী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার মিড ডে মিল প্রকল্পের কোনো বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় কেন্দ্রীয় সরকার গত বাজেটে এই প্রকল্পের ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে।
মিড ডে মিল কর্মী ঐক্য মঞ্চের দাবি- অবিলম্বে রন্ধনকর্মীদের ২৬০০০ টাকা ন্যূনতম মজুরী দিতে হবে, যতদিন না তা দেওয়া হবে ততদিন রাজ্য সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে। সেই সঙ্গে ১০ মাসের বদলে ১২ মাসের মজুরি দিতে হবে। রন্ধনকর্মীদের সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি ও পরিচয় পত্র দিতে হবে। বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র ছাত্রীদের পুষ্টিকর রান্না করা খাবার নিশ্চিত করতে মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়াতে হবে ইত্যাদি।