গৃহবন্দি থেকে মুক্তি পাওয়ার একদিন পর, বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এক ভিডিও বার্তায় দেশের জনগণকে সম্বোধন করেছেন। প্রথম প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়া তাঁর দেশবাসীকে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এক ভিডিও বার্তায় খালেদা জিয়া বলেন, “দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আপনাদের সামনে কথা বলতে পারার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। আমার কারাবন্দী অবস্থায় আপনারা আমার কারামুক্তি ও রোগমুক্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন, দোয়াও করেছেন, সেজন্য আমি আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আরও বলেন, “দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই, আমাদের বীর সন্তানদের যারা মরনপণ সংগ্রাম করে এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। শতশত শহীদদের জানাই শ্রদ্ধা। এ বিজয় আমাদের সামনে নতুন সম্ভবনা নিয়ে এসেছে।”
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘদিনের দুর্নীতি ও গণতন্ত্র ধ্বংস স্তূপের মধ্য থেকে আমাদের নির্মাণ করতে হবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। ছাত্র-তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যত। তরুণরা যে স্বপ্ন নিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে মেধা, যোগ্যতা ও জ্ঞান ভিত্তিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। মানবাধিকার, সামাজিক ন্যায় বিচার ও সাম্যের ভিত্তিতে নির্মাণ করতে হবে শোষণহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।” খালেদা জিয়া ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিরুদ্ধেও সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, “সকল ধর্মের, গোত্রের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শান্তি, প্রগতি আর সাম্যের ভিত্তিতে আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে আসুন আমরা তরুণদের হাত শক্তিশালী করি। ধ্বংস নয়, প্রতিশোধ নয়, প্রতিহিংসা নয়, ভালোবাসা, শান্তি ও জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলি।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতির দায়ে ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিএনপি) চেয়ারপারসন বর্তমানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।