সিমলায় অবৈধ মসজিদ নির্মাণের অভিযোগ, হিন্দু সংগঠনের তুমুল বিক্ষোভ

হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলার সাঞ্ঝৌলিতে মসজিদ নিয়ে চলমান তোলপাড় থামছে বলে মনে হচ্ছে না। মসজিদের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ করছে হিন্দু সংগঠনগুলো। প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিতর্ক। হিন্দু পক্ষ বলছে, সাঞ্ঝৌলির পাঁচ তলা মসজিদটি অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এই মসজিদের অবৈধ নির্মাণ ভেঙ্গে ফেলতে হবে। মসজিদ কমপ্লেক্সটি বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে বুধবার সাড়ে ৫ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেছে হিন্দু সংগঠন ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও হয়। বিক্ষোভকারীরা মসজিদের দিকে মিছিল করে। এসময় পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে লোকজন তা ভেঙ্গে এগিয়ে যেতে থাকে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ও লাঠিচার্জ করে। হিন্দু সংগঠনের বিক্ষোভে কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। লাঠিচার্জ ও সংঘর্ষে আহত ১০ জন হাসপাতালে পৌঁছেছে। এছাড়া পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

জানা গিয়েছে, মসজিদটি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০০৭ সালের পর এর প্রাঙ্গনে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালে মসজিদটিকে অবৈধ ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তবে গত ১৪ বছরে মসজিদটিতে চারটি নতুন ফ্লোর সংযোজন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পৌর কর্পোরেশন বহুবার শুনানি করলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর বলেছেন, তাদের দাবির জন্য আন্দোলনরত লোকদের উপর শক্তি এবং জলকামান ব্যবহার করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই পুরো পর্বে সরকার প্রথম দিন থেকেই পক্ষপাতমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যখন এটা স্পষ্ট যে মসজিদটি বৈধ নয় তখন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, কিন্তু পদক্ষেপ না নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিয়ে চলেছেন। কঠোর পদক্ষেপের কথা বলে জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা সরকারের ব্যর্থতা।”


এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা নরেশ চৌহান বলেছেন, “আন্দোলনকারীদের আইনের আওতার মধ্যে তাদের প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিল। বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই বিজেপির। রাজনৈতিক স্বার্থপরতার কারণে বিজেপি নেতারা জোর করে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অবৈধ নির্মাণের মামলাটি পৌর কর্পোরেশন কমিশনারের আদালতে বিচারাধীন। এই বিষয়টিকে হিন্দু-মুসলমানের সাথে যুক্ত করা উচিত নয়। গত দশ বছরে দেশে এ ধরনের রাজনীতি বেড়েছে।”

মসজিদ বিতর্ক নিয়ে মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন। বেআইনি ভবন নির্মাণের বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে। আমি বিধানসভায় জোরালোভাবে বলেছি, যদি এটি বেআইনি পাওয়া যায় তবে অবশ্যই তা ভেঙে দেওয়া হবে। তবে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই এগোতে হবে। আমরা চাই হিমাচল প্রদেশে শান্তির পরিবেশ বজায় থাকুক।”

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও