ভয়াবহ লোড শেডিংয়ের কবলে বাংলাদেশ, জনদুর্ভোগ চরমে

ভয়াবহ লোড শেডিংয়ের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, প্রায় জেলাতেই দিনে রাতে চলছে লোড শেডিং। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে লোড শেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ মানুষ। ভুক্তভোগীরা বলছেন, সরকার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বিদ্যুতের সফলতার কথা বলছে, তাহলে এতো বিদ্যুৎ গেলো কোথায় ?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দিনে চার থেকে পাঁচবার লোডশেডিং হচ্ছে। কোথাও কোথাও কয়েক ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। এছাড়া ঢাকার বাইরে সারাদেশেই বেড়েছে লোডশেডিং। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বৃদ্ধিতে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি রান্নার চুলাতেও কমেছে গ্যাসের সরবরাহ। বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় লোডশেডিংয়ে ভুগছেন সারাদেশের মানুষ।

সরকারের কর্মকর্তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনছে না সরকার। ফলে গ্যাস সরবরাহ গত কয়েক দিনে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। ফলে কমাতে হয়েছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। একইভাবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রও পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এক স্ট্যাটাসে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, “গ্যাসের স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের উচ্চমূল্য এবং সরবরাহ সব দেশকেই সমস্যায় ফেলেছে। বিষয়টি আমাদেরকেও বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

বাংলাদেশ তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) সূত্র বলছে, দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৭০ কোটি ঘনফুট। সাধারণত গড়ে ৩০০ কোটি ঘনফুটের মতো সরবরাহ করা হয়। দুই দিন ধরে দিনে ২৭৫ থেকে ২৮০ কোটি ঘনফুট করে সরবরাহ করা হচ্ছে। কিছুদিন ধরেই ধাপে ধাপে কমানো হচ্ছিল সরবরাহ। এলএনজি কেনা না হলে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই আপাতত। বিশ্ববাজারে প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ৪০ ডলার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ কেনা হয়েছিল ২৫ ডলারে। সরকারিভাবে এলএনজি আমদানি করে রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)।

সরকারি এ কোম্পানির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, গত মাসে স্পট থেকে তিনটি কার্গো (জাহাজ) এসেছে। দিনে ৭৫ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুট করে সরবরাহ করা হয়েছে। এ মাসে কয়েক দিন ধরে ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। মূলত, রোববার থেকে সরবরাহ এমন কমে যায়। এখন শুধু দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় ওমান ও কাতার থেকে আসা এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে।

বিএল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফাহিম মুনতাসির সাফিন বলেন, দিনে-রাতের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। বিশেষ করে রাতে পড়ার সময়ে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এতে লেখাপড়া করতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশে সবকিছুতেই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে। সেখানেও সমস্যা হচ্ছে। সূত্র: বাংলাদেশের পত্রিকা ‘দৈনিক সংগ্রাম’

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও