পুজোর আনন্দ ভুলে মঞ্চেই আন্দোলন করছেন চাকরি প্রার্থীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টিএইচজি বাংলা, কলকাতা: বছরের এই কয়টা দিন আনন্দ করার সময় হলেও ওরা ঘরে ফিরে সেইভাবে আনন্দ করতে পারছেন না। আন্দোলন করছেন এমন বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীরা বলছেন, উৎসবের এই সময় মঞ্চেই তারা থাকছেন। আপার প্রাইমারি চাকরি প্রার্থীদের একজন মহিম মন্ডল। তিনি জানান, পুজোতেও আন্দোলন চলছে। রাস্তাতেই এখন আমাদের আনন্দ।

হুগলি থেকে প্রাইমারি ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের মঞ্চে আসেন অর্ণব ঘোষ। তিনি জানান, পুজোতেও আন্দোলন চলছে। পুজোর আনন্দ ধর্ণা মঞ্চেই হচ্ছে। লোকেরা যখন আনন্দ করছেন তখন আমাদের ধর্ণা মঞ্চেই থাকতে হচ্ছে। একদিকে আলো আরেকদিকে অন্ধকার থাকবে, এইভাবে দিন কাটাতে হবে।
এসএসসি চাকরি প্রার্থীরাও বলছেন, ঈদের মতো রাস্তাতে তাদের পুজো হচ্ছে। তবে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
ধর্মতলার মাতঙ্গিনী মূর্তির পাদদেশে গিয়ে দেখা গেল, চাকরি প্রার্থীরা অনশন করছেন। মহালয়ার দিনে বহু মহিলা কেঁদেছেন! পুজো এলেও আনন্দ নেই,তাই চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। এক মহিলা চাকরি প্রার্থী জানান, পুজোতে বাড়িতে যেতে পারছিনা। পাস করেও আমরা চাকরি পাচ্ছি না, বয়স পেরিয়ে গেছে। আমরা কী করবো? প্রতিদিন বাড়ি থেকে আসার সময় ছোট্ট মেয়ে জিজ্ঞেস করে,মা চাকরি কবে পাবে? মহিলা হয়ে এতদূর পড়ে কী পেলাম? কত লোক বলতো চাকরি পাবেনা, আজ দিদি প্রমাণ করেছেন, আমরা চাকরি পায়নি। এতো দুঃখ এতো কষ্ট নিয়ে বছরের পর বছর কাটছে।
ঘর-বাড়ি ভুলে নিয়োগের দাবিতে চাকরি প্রার্থীরা মুহুর্মুহু স্লোগান তুলছে। পুজোতে ঘরে ফিরতে পারবে না, মণ্ডপ দেখতে পাবেনা, পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করতে পারে না এটা মানতে পারছেন না তারা। চাকরি প্রার্থীরা বলছেন, আশা ছিল পুজোর আগে চাকরি মিলবে। কিন্তু হয়নি।
২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী ২০২০ সালে বলেছিলেন প্রাইমারি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত সবার নিয়োগ হবে। ২০১৪ সালে আমার টেট পাশ করেছি। দুবার ইন্টারভিউ দিয়েছি, আমরা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা বঞ্চিত। বাংলার আকাশে বাতাসে পুজো। কিন্তু হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত আমরা। কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না।” আরেক চাকরিরপ্রার্থীর কথায়, “সন্তানকে বাধ্য হয়ে বাড়িতে রেখে দিয়ে আসতে হচ্ছে। এটা খুবই যন্ত্রণার। বাড়িতে ঠিক করে খায় কিনা জানি।”

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও