কলকাতায় ওয়েলফেয়ার পার্টির বিশাল বিক্ষোভ, মোদি-মমতাকে হুঁশিয়ারি

বৃহস্পতিবার কলকাতায় ওয়েলফেয়ার পার্টির পক্ষ থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল হয়, সেই সঙ্গে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি ও বেকারত্বের জন্য মোদি-মমতা সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি। এদিন রামলীলা ময়দান থেকে মিছিল শুরু হয়। দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলো থেকে হাজার হাজার কর্মী মিছিলে অংশ নেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গর্জে ওঠে জনপদ। কলকাতায় আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্ন তোলেন ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতা কর্মীরা। মিছিলে প্রচুর মহিলা অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়া মিছিলের শেষভাগে যুবকদের বিশাল উপস্থিতি ছিল।
ওয়েলফেয়ার পার্টির রাজ্য সভাপতি মনসা সেন, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার হাসান, মহিলা নেত্রী রোহিনা খাতুন, ফ্রাটারনিটি মুভমেন্টের কেন্দ্রীয় সম্পাদক আবু জাফর মোল্লা,ফিটুর মাহিনুর জামান সহ অসংখ্য নেতা কর্মী মিছিলে হেঁটেছেন।

দলের রাজ্য সভাপতি মনসা সেন জানান,
গোটা দেশজুড়ে ওয়েলফেয়ার পার্টি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও বেকারত্ব দূরীকরণের দাবিতে আন্দোলন করছে। ‘দেশ জুড়ে তোলপাড়,বেহাল দশা জীবিকার’ শিরোনামে অভিযান শুরু করেছে। আমাদের দাবি, মূল্যবৃদ্ধির উর্দ্ধগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর জিএসটি প্রত্যাহার করতে হবে।’
এদিন মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে, বছরে দুই কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল, বিজেপি সরকার জবাব দাও। কলকাতায় আন্দোলন রত চাকরি প্রার্থীদের দাবি মানতে হবে, নইলে গদি ছাড়তে হবে। অবিলম্বে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ দিতে হবে। পেট্রোল ডিজেল, কেরোসিনের দাম বাড়ছে কেন, মোদি মমতা জবাব দাও
এদিন ওয়েলফেয়ার পার্টির পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি জমা দেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মুহাম্মদ জালালউদ্দীন আহমেদ, রাজ্য সহ সভাপতি মির্জা নুরুল হাসান,প্রাক্তন মহিলা নেত্রী শাহজাদী পারভীন, আমিনুল ইসলাম।
দলের দাবি, সমস্ত বিপিএল পরিবারে বিনামূল্যে গ্যাস সিলিন্ডার দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কল্যাণ অন্ন রোজগার যোজনা অব্যাহত রাখতে হবে।
একশো দিনের পরিবর্তে দুইশো দিন কাজ চাই এবং কাজের মজুরি ৫০০ টাকা করতে হবে।
পেট্রোল, ডিজেলকে জিএসটির আওতায় আনতে হবে। বেকার যুবকদের বেকার ভাতা দিতে হবে। নির্বিচারে সব ক্ষেত্রে বেসরকারীকরণ বন্ধ করতে হবে। অগ্নিপথ প্রকল্প বাতিল করতে হবে।
মিছিলে স্লোগান ওঠে, মোদি মমতা হায় হায়!
চাকরি দেবার ক্ষমতা নাই! সাদা খাতায় চাকরি হয়। যোগ্যরা সব পথে রয়
তৃণমূল সরকার আর না। বাংলা কাঁদে চোখের জলে।
রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার হাসান মিছিল শেষে এক বক্তব্যে বলেন, যে সরকার জনগণকে চাকরি দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। যে সরকার জিনিসপত্রের দাম কমাতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই।
এদিন পুরো বিক্ষোভ মিছিল জুড়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতৃত্ব। দলটি বলছে, দুটি সরকারই জনগণকে ধোকা দিয়েছে। দীর্ঘ ১৪ বছরেও মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রে নতুন শিক্ষক নিয়োগ হল না কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্নও করেন দলটির কর্মীরা। ওয়েলফেয়ার পার্টির স্পষ্ট দাবি, সবার হাতে কাজ দাও,
নইলে সরকার বিদায় নাও।
দলটি মনে করছে, ঘুগনি, চপের ব্যবসা করতে বলে বাংলার মানুষকে অপমান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া আট বছরেও আপার প্রাইমারি চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ হচ্ছে না কেন সেই জবাব মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চেয়েছেন ওয়েলফেয়ার পার্টির নেতা কর্মীরা। শুধু তাই নয়, ৬০০ দিন ধরে এসএসসি চাকরি প্রার্থীরা রাজপথে থাকলেও সরকার আলোচনায় বসছে না কেন সেই প্রশ্ন তোলে দলটি। মিছিলে অংশ নিয়ে রাজ্য কমিটির সদস্য মুন্টুরাম হালদার জানান, বিজেপি-তৃণমূল কংগ্রেসের অপশাসনের বিরুদ্ধে ওয়েলফেয়ার পার্টির লড়াই চলবে।
মিছিল শেষে বহু পুরুষ মহিলা বিভিন্ন দল ছেড়ে ওয়েলফেয়ার পার্টিতে যোগ দেন। দলের রাজ্য সভাপতি মনসা সেন তাদের হাতে পতাকা তুলে দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও