স্বামী: সাধন পাল-
আমি আগে থেকেই জানতাম উনি গেছেন একটা আন্দোলন নিয়ে। টিভির পর্দায় দেখছি একজন মহিলা পুলিশ তাকে ধরে আছে আর একটা মহিলা পুলিশ তাকে তাড়া করে গিয়ে কামড়াচ্ছে ক্যামেরার সামনে দিনের আলোতে। আমরাতো দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি, একটা সভ্য সমাজে এই দৃশ্য কি ভাবা যায়? তার কোনো অপরাধ নেই, আমি আদৌ জানলাম না তার অপরাধটা কী। সে শুধু আমাদের গনতান্ত্রিক অধিকার, আমাদের সংবিধান শিক্ষিতভা অধিকার, সে আন্দোলনে গেছে তার ন্যায্য দাবির জন্য। সেই আন্দোলনরত মহিলাকে তাড়াও করে কামড় দিয়েছে , এবং অবাক হচ্ছি যে কামড়িয়েছে তাকে তত্কালীন হাসপাতালে ভর্তি করা হলো আর আমার ওয়াইফ যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে থানাতে তাকে ট্রিটমেন্টের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি আমি টিভির পর্দায় দেখছি একজন পুলিশ ক্যামেরার সামনে থানায় দাঁড়িয়ে বলছে মরার পরে আমি দায়িত্ব নেব। তার পরও তারাতো প্রশাসন, মেরিট লিস্ট থাকবে যেখান থেকে প্রথম থেকে চাকরি দেবে কোনো লিস্ট তৈরি হয়নি এবং এই নিয়ে পরিষদ চুপচাপ। তবে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি আমি আর আমার ছাট্টো মেয়ে সারারাত ঘুমোতে পারিনি আমাদের রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়া বন্ধ, আমরা অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন সে বাড়ি ফিরবে। আমাদের যে মানবাধিকার কমিশন এবং বুদ্ধিজীবী মহল, আমি এই বয়সে বহু বুদ্ধিজীবী আন্দোলন দেখেছি, বহু মানবাধিকার কমিশনার তাদের অ্যাক্টিভিটি দেখেছি, তাদের প্রতিবাদ দেখেছি। আমি অবাক হয়ে গেলাম কাল থেকে তারা নীরব।
মা অলকা পাল:
আমার মেয়ে তো ন্যায্য দাবিই করেছে, অন্যায় ভাবে তো কিছু দাবি করেনি। তার প্রাপ্য হল একটা পুলিশের কামড়। এরপর তার বিচার তো হলোই না তাকে লকাপে রেখে সে যন্ত্রণায় ছটফট করছে, সে একটু মেডিকেল ট্রিটমেন্ট চাইছে পুলিশ বলছে সে দায়িত্ব আমাদের নয়, আমাদের দায়িত্ব মৃত্যুর পরে। টিভির পর্দায় আমি মা হয়ে সেটা দেখলাম এবং শুনলাম, এই বয়সে কি এগুলো সহ্য করা যায়? বুদ্ধিজীবীদের কাছে মানবাধিকার কমিশনের কাছে অরুনিমার মা হয়ে আমি ৭০ বছরের মহিলা আমি ন্যায্য বিচার চাইছি। কালকে থেকে ঘুম নেই খাওয়া নেই, কাঁদতে কাঁদতে আমি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ছি এবং আমার নাতনিও। নানাবিধ হুমকি আসছে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, এবার প্রশাসনের কাছে এটাই আপিল যে আমার মেয়ে যেন সুস্থ হয়ে নির্বিঘ্নে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঘরে ফেরে।
