হিংসাত্মক আন্দোলনে যে কোনও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি রুখতে এ বার আইনে বদল আনছে মমতার সরকার

আন্দোলনের নামে কোনও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি করলে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অভিযুক্তদের। এত দিন শুধু সরকারি সম্পত্তির ক্ষেত্রেই এই আইন ছিল। মঙ্গলবার বিধানসভায় সেই আইনেই সংশোধনী এনে বলা হল, এ বার থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। অর্থাৎ এখন থেকে আন্দোলনের সময় সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত কোনও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিধানসভায় পাশ হওয়া এই বিল এ বার যাবে রাজ্যপালের কাছে। তার পরেই চালু হবে নতুন আইন।

মঙ্গলবার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিলটি পেশ করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্য। ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মেনটেনেন্স অব পাবলিক অর্ডার (সংশোধনী) বিল, ২০২৩’ পাশও হয়ে যায়। বিল পাশের পর চন্দ্রিমা বলেন, ‘‘আন্দোলনের নামে অনেক সময় সমাজবিরোধী কার্যকলাপ হয়। সম্পত্তি ভাঙচুর, লুঠের মতো ধংসাত্মক কাজও হয়। এত দিন শুধু সরকারি সম্পত্তির ক্ষেত্রে এর ক্ষতিপূরণ দিতে হত। এ বার বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত ক্ষেত্রেও তা দিতে হবে।’’

সংশোধিত আইন অনুযায়ী, আন্দোলনের সময় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলে ৬০ দিনের মধ্যে স্থানীয় আদালতে অভিযোগ জানিয়ে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে হবে। ১৮০ দিনের মধ্যে আদালত অন্তর্বতী একটি নির্দেশ দেবে। সেই নির্দেশের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা সংগঠনকে জবাবদিহির সুযোগ দেওয়া হবে। সব পক্ষের শুনানির পর এ বিষয়ে আদালত রায় দেবে।

সরকার পক্ষের দাবি, এ ক্ষেত্রে আদালত সতন্ত্র ভাবে কাজ করবে। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, ক্ষতিগ্রস্তকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া। বছর কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকারও এই ধরনের একটি বিল পাশ করে আইন এনেছে। তবে চন্দ্রিমার দাবি, সে ক্ষেত্রে সরকার নিজে বুলডোজার চালিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আন্দোলন করতে গিয়ে যদি সরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি, ব্যক্তিগত কারও সম্পদের ক্ষতি হয়, তা হলে কেবলমাত্র এই আইনের ব্যবহার করা হবে। এই আইন বলবৎ করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার বুলডোজার প্রয়োগ করবে না।
তবে বিজেপি বিষয়টিতে মোটেই খুশি নয়। বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয় বিরোধীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন রুখতেই এই বিলটি আনা হয়েছে। আসলে এই বিল এনে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর রোধ করার চেষ্টা করছে সরকার। পঞ্চায়েত ভোটের আগের বিরোধিরা যাতে প্রার্থী না দিতে পারে, ভোটে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াই না করতে পারে, সেই কারণেই এই বিলটি আনা হয়েছে।’’ (সৌজন্যে: আনন্দবাজার অনলাইন)

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও