বিজেপি’কে হটাতে বিরোধীদের সমন্বয় হবে রাজ্যের বাস্তবতা অনুযায়ী: ইয়েচুরি

দেশের গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র অটুট রাখতে হবে। তার জন্য বিজেপি’কে সরকার এবং রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে হবে। বিজেপি বিরোধী ভোট সর্বোচ্চ করা দরকার। রাজ্যে রাজ্যে বাস্তবতা অনুযায়ী। এনিয়ে আলোচনা হবে।
মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী ২৬ দলের বৈঠক শেষে এই লক্ষ্য জানিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি বলেছেন, ‘‘২৬টি বিরোধী দল সহমত হয়েছে একটি ধর্মনিরপেক্ষ বিকল্প বোঝাপড়া গড়তে, যার নাম ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স, সংক্ষেপে ‘ইন্ডিয়া’।’’
ইয়েচুরি এদিন বলেন, ‘‘বিজেপি কেন্দ্রে তাদের সরকার চালিয়ে আঘাত নামিয়ে চলেছে জনতার ওপর। জীবিকার ওপর আঘাত নামছে, আঘাত নামছে অধিকার এবং কঠিন লড়াইয়ে অর্জিত স্বাধীনতার ওপরও। এই আক্রমণ ঠেলে সরাতে চাইছে ‘ইন্ডিয়া’। বোঝাপড়ার ভিত গড়বে সমানতা, মুক্তি, সামাজিক ন্যায় এবং ভ্রাতৃত্ববোধ।’’
তাঁর মন্তব্য, ‘‘সংবিধানের শুরুতেই বলা হয়েছে ‘ইন্ডিয়া দ্যাট ইজ ভারত। ‘ইন্ডিয়া’ এবং জনতা জয়ী হবে।’’
রাজ্যে রাজ্যে বাস্তবতা আলাদা। ফলে বিজেপি বিরোধী ভোটভাগের প্রশ্নে সর্বত্র বিরোধী রাজনৈতিক বিন্যাস যে একরকম হবে না, জানিয়েছেন ইয়েচুরি। বেঙ্গালুরুতে বৈঠক শুরুর দিনই তিনি বলেন যে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস লড়বে বিজেপি এবং তৃণমূল, দু’য়ের বিরুদ্ধেই। যেমন, কেরালায় কংগ্রেস এবং সিপিআই(এম) নেতৃত্বাধীন দুই জোট ইউডিএফ এবং এলডিএফ একে অপরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
এদিন ইয়েচুরি বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরুতে দু’দিনের বৈঠকে মুখ্য বোঝাপড়া হলো দেশের গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র অটুট রাখতে হবে। জনতার ওপর আঘাত রুখতে হবে। তার জন্য বিজেপি’কে সরকার এবং রাষ্ট্র ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে হবে।’’
তিনি স্পষ্টই বলেন, ‘‘দলগুলির সমন্বয় কেবল রাজ্যস্তরেই হতে পারে। রাজ্যের বাস্তবতা অনুযায়ী আলোচনা হবে। লক্ষ্য হলো বিজেপি বিরোধী ভোট যাতে সর্বোচ্চ করা যায়। ভোট বিভাজনের সুবিধা যাতে বিজেপি না পায়।’’
আগামী মাসে বিরোধীদের বৈঠক রয়েছে মুম্বাইয়ে। মঙ্গলবারই দিল্লিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ডেকে এনে বৈঠক করেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘আমরা দায়ে পড়ে জোট করি না। জোট আমাদের শক্তি।’’
এদিন বিরোধী নেতারা বলেছেন যে তাঁদের একতায় ভয় পেয়ে ৩৮ দলকে নিয়ে জোট এনডিএ’র বৈঠক ডাকার ঘোষণা করছে বিজেপি। নরেন্দ্র মোদীর সময়ে জোট বাস্তবে তুলেই দিয়েছিল বিজেপি। এমন দল রয়েছে যার নাম বিজেপি নেতারাও জানেন না।
মোদী দিল্লিতে এনডিএ বৈঠকে অন্যতম নিশানা হিসেবে বেছে নিয়েছেন বামপন্থীদের। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের বিরোধিতা এবং কেরালায় কংগ্রেসের সঙ্গে বামফ্রন্টের বিরোধিতা তোলেন বক্তৃতায়। মোদী বলেন, ‘‘এরা একসঙ্গে বৈঠক করতে পারে, তবে একসঙ্গে চলতে পারে না।’’ জাতীয় স্তরের কার্যক্রম থেকে চেষ্টা করেও বামপন্থীদের বিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না। সেই খেদ মোদীর বক্তব্যে স্পষ্ট।
পশ্চিমবঙ্গ প্রসঙ্গে বামপন্থীরা বারবারই বলছেন যে তৃণমূলকে রাজ্যের সরকার থেকে হটাতে হবে। তার জন্য বিজেপি’কে দেশের সরকার থেকে হটানো জরুরি। একে অন্যের সক্রিয় সহযোগিতায় মানুষের ওপর আঘাত নামাচ্ছে। গণশক্তি

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও