পুরুলিয়ার কাশীপুর থানা এলাকার গৌরাঙ্গডিতে কয়েকেজন সাধুকে মারধরের অভিযোগ স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। তাঁরা মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে গঙ্গাসাগরে যাচ্ছিল বলে জানা যাচ্ছে। মেয়ে পাচারকারী ভেবে জনতা বেধড়ক মারধর করে। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ সাধুদের ভিড় থেকে উদ্ধার করে। গত বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশ থেকে গাড়িতে করে তিনজন সাধু গঙ্গাসাগর যাচ্ছিলেন। জানা যাচ্ছে, সাধুরা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েদের কিছু জিজ্ঞেস করলে মেয়েরা চিৎকার করে পালিয়ে যেতে থাকে। গুজব ছড়িয়ে পড়লে বিপুল সংখ্যক মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে সাধুদের অপহরণকারী ভেবে হামলা চালায়। স্থানীয় পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছে সাধুদের ভিড় থেকে উদ্ধার করে কাশীপুর থানায় নিয়ে আসে। ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাগবিতণ্ডা। পুরুলিয়ার সাংসদ ও বিজেপি নেতা জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এই হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করেছেন। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় সামাজিও মাধ্যমে পোস্ট করে ঘটনাটিকে মহারাষ্ট্রের পালঘরের সাধু নিগ্রহের সঙ্গে তুলনা করে বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিশানা করেছেন।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ও তৃণমূল নেত্রী শশী পাঁজা বলেছেন, “তিনজন মেয়েকে অপহরণের চেস্টা করেছে বলে স্থানীয়রা মনে করে। অপহরণকারী সন্দেহে স্থানীয়রা সাধুদের মারধর করে। দুই পক্ষ থেকেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত করা হচ্ছে।” তৃণমুলের অভিযোগ, বিজেপি অহেতুক মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করছে।
পুরুলিয়ার এসপি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “তিনজন সাধু একটি গাড়িতে যাচ্ছিলেন। গৌরাঙ্গডির কাছে, তিনটি মেয়ে পূজা করতে স্থানীয় একটি কালী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। গাড়ি তাদের কাছে থামিয়ে সাধু তাদের কিছু জিজ্ঞাসা করে, ভাষা বুঝতে না পারায় কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয় এবং মেয়েরা ভেবেছিল যে সাধুরা তাদের পিছু নিয়েছে। স্থানীয় লোকজন এসে দুর্গা মন্দিরের কাছে সাধুদের নিয়ে যায় এবং তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে। সাধুদের মারধর করা হয়।পুলিশ সাধুদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। এক সাধুর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে”।