এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বাজেট অধিবেশন চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। লোকসভায় আলোচনার সময় তিনি বলেছেন, শুধুমাত্র একটি মতাদর্শ এবং বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে হায়দ্রাবাদের সাংসদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি পুরোহিত-সম্রাটের মতো কাজ করছেন। মুসলমানদের দমন করার অপচেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি মসজিদ ছিনিয়ে নিতে চায়। ৬ ডিসেম্বরের কথা বলার সাহস কারো নেই। ওয়াইসি বলেছেন, ২২ জানুয়ারীর প্রাণ প্রতিস্থার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ সালে। এর ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে তালা খুলে দিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, প্রতিটি মসজিদ কেড়ে নিলে আমার অস্তিত্বের কী অর্থ হবে। তিনি প্রশ্ন করেন যে, সরকার কেন ১৯৯১ সালের উপাসনালয় আইন নিয়ে কথা বলছে না। আপনি ৫০০ বছরের কথা বলেন, আমি বলি ১৯৪৭ সালে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। বাবাসাহেবের তৈরি একটি সমান সংবিধান পায়। এর আগে রাজা-রাজ্য ছিল, কিন্তু গণতন্ত্র ছিল না।
তিনি আরও বলেছেন, পিএম মোদি সেই তারিখ লিখতে চান যে আমি বাবাসাহেব এবং মহাত্মা গান্ধীর দেশকে হিন্দু জাতি বানিয়েছিলাম। আমি আশা করি দেশের হিন্দু ভাইয়েরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর চিন্তাকে নস্যাৎ করে দেবেন। সরকারকে আক্রমণ করে ওয়াইসি বলেন, মুসলিমদের কথা বাদ দিন, বাজেট অধিবেশনের বক্তৃতায় সংখ্যালঘুদের নামও উল্লেখ করা হয়নি। হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি লোকসভায় বলেছেন, “ভারতে ১৪ শতাংশ মুসলিম রয়েছে। তাদের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। মোদি সরকারের গত দশ বছরে মুসলমানরা দেখেছে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। আজ ১৭ কোটি মুসলমান নিজেদেরকে এমন ভাবে, হিটলারের যুগে ইহুদিরা যেভাবে মনে করত। ওয়াইসি বলেছেন, বাজেটে আপনি প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ কমিয়ে শুধুমাত্র ক্লাস নাইনে করেছেন। এতে টাকাও কমেছে। ২০২২-২৩ সালের বাজেটে ৫ হাজার ২৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু মাত্র ৬৬৩ কোটি টাকা ব্যবহার করা হয়েছিল। আপনি এই বছর প্রাক-ম্যাট্রিক বৃত্তি ৪২৩ কোটি টাকা থেকে ৩২৬ কোটি টাকা করেছেন।
আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, এই সরকার জনগণকে হয়রানি করতে কোনো কসরত রাখেনি। তিনি বলেন, “গত দশ বছরে এক ব্যক্তি, এক ধর্ম ও এক আদর্শকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এমতাবস্থায় আমাদের গণতন্ত্র ফাঁপা হয়ে গেছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের নাম না নিয়ে তিনি বলেছেন, একজন নেতা বলেছেন যে আমরা আট দিনের মধ্যে এটি কার্যকর করব। আপনি যদি সিএএকে ধর্মের সাথে যুক্ত করেন তবে আপনার উদ্দেশ্য খারাপ। আপনার উদ্দেশ্য ভারতের মুসলিম ও দলিতদের হয়রানি করা। আমরা সিএএ এর বিরুদ্ধে কারণ আপনি সীমাঞ্চলের মুসলিমদের বাংলাদেশি বলেন।