বাড়ির কর্তার মৃত্যুশোকে বাকিরাও মৃত্যু মুখে!

 

 

বাড়ির একজনের মৃত্যুর পর বাকিরা নিজেদের ‘ বন্দি ‘ করে রাখে। অবশেষে বাবার মৃত্যুশোকে ঘরবন্দি হওয়া পুত্রের মৃত্যু হল হুগলির উত্তরপাড়া হাসপাতালে।
খবরে প্রকাশ, গত সোমবার উত্তরপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউর থার্ড লেনের ‘গগন ভিলা’র মূল দরজা ভেঙে ওই পরিবারের তিন সদস্যকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুরসভা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অশীতিপর শ্যামলী মুখোপাধ্যায়, তাঁর ছেলে সৌরভ (৫৫) এবং মেয়ে চুমকি মুখোপাধ্যায়কে। আনন্দবাজার অনলাইন স্থানীয় সূত্রে জেনেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়ির কর্তা গগনবরণ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা নিজেদের ‘স্বেচ্ছাবন্দি’ করে ফেলেন বাড়িতে। এক আত্মীয়কে ফোনে সৌরভ বলেছিলেন, ‘মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছি।’ বস্তুত, প্রায় না খাওয়াদাওয়া করে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছিলেন তিন জনই। এ ভাবেই দিন কুড়ি কেটে গিয়েছে। তার পর খবর পেয়ে তিন জনকে উদ্ধার করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সৌরভকে বাঁচানো যায়নি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওই প্রৌঢ়ের মায়ের শারীরিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও বোনের অবস্থা সঙ্কটজনক।

আনন্দবাজার অনলাইন লিখেছে, সৌরভের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর এক আত্মীয় বৈষ্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গৃহকর্তা গগন মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর থেকে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিন জন। বাড়ি থেকে বেরোনো বন্ধ করে দেন সকলেই। কারও সঙ্গেই যোগাযোগও ছিল না। মাসখানেক না খেয়েদেয়ে এ ভাবেই হয়তো পড়ে ছিলেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এক দিন আমাকে ফোন করে সৌরভ বলে, ‘দাদা, আমার শরীর খুব খারাপ। এক মাস আমরা কিছু খাইনি। এক বার আসবে?’ আমি আসতে চাইলে বলে আজ পূর্ণিমা। কাল এসো। তা সত্ত্বেও আমি আসি। কিন্তু দরজা খোলে না। এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর সৌরভ দরজা খুলে বলে, ‘আর দু দিন বাঁচব।’ আমি বলেছিলাম, ‘তুই মারা গেলে মা-বোনকে কে দেখবে?’

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও