নির্বাচনী ইস্তেহারে ‘দিদির ১০ শপথ’, দেখে নিন তৃণমূলের প্রতিশ্রুতি

বুধবার চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের জন্য ইস্তেহার প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যদি কেন্দ্রে সরকার গঠিত হয় তবে সিএএ বাতিল করবে। এনআরসি প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যাবে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) কার্যকর না করার ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রও উপস্থিত ছিলেন। দলটি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করেছে, যাতে লেখা, “আমরা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য আমাদের ইস্তেহার প্রকাশ করতে পেরে খুশি। দিদির শপথ নিয়ে আমরা প্রত্যেক ভারতীয়কে কর্মসংস্থান, সবার জন্য ঘর, বিনামূল্যে এলপিজি সিলিন্ডার, কৃষকদের এমএসপি, এসসি-এসটি এবং ওবিসি ছাত্রদের বৃত্তি দেওয়ার শপথ নিচ্ছি। আমরা একসাথে বিজেপির জমিদারদের উৎখাত করব এবং সবার জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করব।” দলের ইস্তেহারকে তৃণমূল ‘দিদির শপথ’ বলে আখ্যায়িত করেছেম। তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ইস্তেহার প্রকাশ করে দলের জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের জনগণের কাছে ১০টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমাদের অবস্থান হল বাংলায় সিএএ প্রয়োগ করা হবে না, এনআরসি এবং ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি)ও কার্যকর হতে দেওয়া হবে না। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অংশ হিসাবে তৃণমূল কেন্দ্রে সরকার গঠন করলে এই প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ হবে। ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, যদি কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোট সরকার গঠিত হয়, তৃনমুলের সমর্থনে-এর অধীনে শ্রমিকদের প্রতিদিন ৪০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সবার জন্য স্থায়ী বাড়ি তৈরি করা হবে। টিএমসির ইস্তেহার অনুসারে, যদি কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’ জোট সরকার গঠিত হয়, সমস্ত বিপিএল পরিবারকে প্রতি বছর বিনামূল্যে ১০টি এলপিজি সিলিন্ডার দেওয়া হবে। সমস্ত রেশন কার্ডধারীদের প্রতি মাসে পাঁচ কেজি রেশন বিনামূল্যে দেওয়া হবে। এছাড়াও, বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে এবং এর জন্য কোনও চার্জ দেওয়া হবে না। ৬০ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিকদের প্রতি মাসে ১হাজার টাকা পেনশন দেওয়া হবে। লক্ষ্মী ভান্ডার প্রকল্প জাতীয় স্তরে বাস্তবায়িত হবে যার অধীনে মহিলাদের একটি নির্দিষ্ট মাসিক পরিমাণ দেওয়া হবে। সমস্ত নাগরিককে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করবে।

তৃণমূলের ইস্তেহারে ১০ প্রতিশ্রুতি:

১. ‘বর্ধিত আয়, শ্রমিকদের সহায়’:
সমস্ত জব কার্ড হোল্ডারদের ১০০ দিনের গ্যারান্টিযুক্ত কাজ প্রদান করা হবে এবং সমস্ত শ্রমিক ন্যূনতম দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি পাবে।

২. ‘দেশ জুড়ে বাড়ি, হবে সবারই’:
দেশের প্রত্যেক দরিদ্র পরিবারের জন্য পাকা, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বাড়ি নিশ্চিত করা হবে।

৩. ‘জ্বালানির জ্বালা কমবে, দেশের জ্বালা ঘুচবে’:
প্রত্যেক বিপিএল পরিবার বিনামূল্যে বছরে ১০টি করে এলপিজি সিলিন্ডার পাবে।

৪. ‘অনেক হয়েছে শাসন, এবার দুয়ারে রেশন’:
-সমস্ত রেশন কার্ড হোল্ডার প্রতি মাসে বিনামূল্যে ৫ কেজি রেশন পাবে।
-প্রত্যেক সুবিধাভোগীর দোরগোড়ায় বিনামূল্যে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে।

৫. ‘বর্ধিত আয় নিশ্চিত এবার, ফুটবে হাসি অন্নদাতার’:
স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে, ভারতের কৃষকদের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইনত নিশ্চিত করা হবে, যা সমস্ত ফসলের গড় উৎপাদন খরচের চেয়ে ন্যূনতম ৫০% বেশি হবে।

৬. ‘স্বল্পমূল্যে পেট্রপণ্য, ভারতবর্ষে সকলে ধন্য’:
– পেট্রল, ডিজেল এবং এলপিজি সিলিন্ডারের খরচ নাগালে রাখতে দামের ঊর্ধ্বসীমা সীমাবদ্ধ করা হবে।
-দামের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একটি ‘প্রাইজ স্টেবিলাইজেশন ফান্ড’ প্রতিষ্ঠিত হবে।

৭. ‘নিশ্চিন্ত ভবিষ্যৎ অর্জন, যুবশক্তির গর্জন’:
-২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল স্নাতক এবং ডিপ্লোমাধারীরা মাসিক উপবৃত্তি সহ ১ বছরের প্রশিক্ষণ পাবেন।
– উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ প্রদান করা হবে।

৮. ‘স্বচ্ছ আইন, স্বাধীন ভারত’:
– বৈষম্যমূলক সিএএ বিলুপ্ত করা হবে এবং এনআরসি বন্ধ করা হবে।
-ভারতের বৈচিত্র্য রক্ষার জন্য ইউসিসি প্রয়োগ করা হবে না।

৯. ‘এগিয়ে বাংলা, এগোবে ভারত’:
-কন্যাশ্রীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান।
-লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সব মহিলাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।
– স্বাস্থ্য সাথীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ১০ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বীমা।

১০. ‘আমাদের অঙ্গীকার, নিরাপত্তা বাড়বে সবার’:
– তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার বৃত্তি বৃদ্ধি করা হবে।
-৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বার্ধক্য ভাতা বাড়িয়ে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও