মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্বেষমূলক ভাষন, নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ কংগ্রেসের

লোকসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক দল এবং নেতাদের মধ্যে বক্তৃতার পর্ব অব্যাহত রয়েছে। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ আসছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজস্থানের বাঁশওয়ারার জনসভাই কংগ্রেসের বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। এর বিরুদ্ধে দলটি তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেওয়া ভাষণকে বিদ্বেষমূলক, বেআইনি এবং সংবিধানের চেতনার পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছে। সোমবার কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে দলটি বলেছে, মোদী তাঁর অবস্থানের মর্যাদার বিপরীতে একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বিভক্ত, বিদ্বেষপূর্ণ এবং মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন।নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কংগ্রেস সোমবার নির্বাচন কমিশনকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের দাবি, তিনি ‘বিভাজনকারী’ বিবৃতি দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল সোমবার নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে স্বারকলিপি জমা দেই। প্রধানমন্ত্রী মোদীর মন্তব্য এবং অন্যান্য কিছু বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি এবং গুরদীপ সপ্পল। সিংভি বলেন, “আমরা মোট ১৭ টি অভিযোগ করেছি। এই সমস্ত অভিযোগ গুরুতর এবং দেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলিকে আক্রমণ করে। আমরা আশা করি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুনির্দিষ্ট এবং স্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” সিংভি আরও বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের বিবৃতি দেওয়া উচিত নয়। এই মন্তব্যটি তাঁর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলেও শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে একটি সম্পদায়ের নাম নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে যে সম্প্রদায়টি সমস্ত সম্পদ হস্তগত করবে। মঙ্গলসূত্রের বিষয়ে এতে কথা বলা হয়েছে।”

সিংভির অভিযোগ, “প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত একজন ব্যক্তি জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৩ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। ভারতীয় সংবিধানের পরিচয়ে আঘাত করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “এটা ভারতের বিশ্বাসযোগ্যতা, সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর পদ এবং নির্বাচন কমিশনের বিশ্বস্ততার প্রশ্ন। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে, তা যত বড়ই ব্যক্তি হোক না কেন। কারণ এটি সাংবিধানিক পরিচয়ের প্রশ্ন।” কংগ্রেস তাদের স্মারকলিপিতে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে বিভেদমূলক এবং বিদ্বেষমূলক বলে বর্ণনা করেছে। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মোদী রবিবার রাজস্থানে একটি নির্বাচনী জনসভায় বলেছিলেন, কংগ্রেস যদি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে, তবে তারা জনগণের সম্পত্তি নিয়ে মুসলিদের মধ্যে বিতরণ করবে। জনগণের সম্পত্তি নিয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং যাদের বেশি সন্তান আছে তাদের মধ্যে তা বিতরণ করবে। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের চেতনার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশন যদি শক্ত প্রমাণ সহ অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা দেখায় তবে এটি কেবল তার বিশ্বাসযোগ্যতাকেই কলঙ্কিত করবে।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও