‘অল আইজ অন রাফা’ স্লোগানটি কি বার্তা দিচ্ছে?

ফিলিস্তিনের গাজার রাফা শহরের শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যা বয়ে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ‘অল আইজ অন রাফা’ শ্লোগানটি নিয়ে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে ছবিটি। এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার পর্যন্ত ছবিটি শেয়ার হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৫০ লাখ বার। যারা ছবিটি শেয়ার করছেন, তাদের মধ্যে অনেক তারকাও আছেন। মূলত এই শব্দগুচ্ছ দিয়ে গাজায় চলমান গণহত্যা বোঝানো হচ্ছে।

ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার শিকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাতে ব্যবহারকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ছবি পোস্ট করেছেন। মূলত এটি একটি ক্যাম্পেইন। বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী ও কর্মীদের নেতৃত্বে ক্যাম্পেইনটি পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি এটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করা ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করারও একটি প্রচেষ্টা। ‘অল আইজ অন রাফাহ’ লেখা ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি করা ভাইরাল ‘অ্যাক্টিভিস্ট আইকনোগ্রাফির’ প্রথম ছবিগুলোর মধ্যে একটি বলেও ধারণা করা হচ্ছে। ‘মিসইনফরমেশন’ নিয়ে পড়াশোনা করা কাতারের হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সহযোগী অধ্যাপক মার্ক ওয়েন জোন্স বলেছেন, দেখে মনে হচ্ছে ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি করা।

‘সবার চোখ রাফার দিকে’ ছবিটি ব্যাপকভাবে শেয়ারের প্রবণতাকে ইন্টারনেট অ্যাকটিভিজম হিসেবে দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেনবার্গ স্কুল ফর কমিউনিকেশনের সহযোগী অধ্যাপক সারাহ জ্যাকসন। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, ইন্টারনেট অ্যাকটিভিজমের সূত্রপাত গত শতকের নব্বইয়ের দশকে। এখন ইনস্টাগ্রাম সামাজিক পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। এখন মাঠপর্যায়ে বা ঘটনাস্থলে যা ঘটছে, তা শেয়ার করার জন্য অনেক ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করছেন। এই সাংবাদিকদের অনেককেই সরাসরি নিশানা করা হয়েছে, সেন্সর করা হয়েছে। কিন্তু ইনস্টাগ্রাম এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যা তাদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ছবিটি প্রথম দেন ‘shahv 4012’ নামের এক ব্যবহারকারী। তিনি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে লিখেছেন, যা-ই করুন না কেন, রাফা ইস্যুকে অবহেলা করবেন না। এটি (ছবি) ছড়িয়ে দিন, যাতে তারা সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে কাঁপতে থাকে। ছবিটিতে ব্যবহার করা স্লোগানটি সম্ভবত গাজায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্নের একটি বক্তব্য থেকে নেওয়া হয়েছে। তিনি একবার বলেছিলেন, রাফায় যা ঘটছে, সব চোখ সেদিকে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় হামাস। এতে এক হাজার ১৭০ জন নিহত হন। জবাবে নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এ হামলায় গাজায় এ পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। সূত্র: দেশ রুপান্তর

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও