লাভ ম্যারেজে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই পরিণতি ডিভোর্স, বলছে সমীক্ষা রিপোর্ট

বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানের যে গরিমা ছিল আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগেও, তা যেন বর্তমানে অনেকটাই ফিকে হয়েছে। সারা বিশ্বের দ্রুত পরিবর্তনশীল বিষয়গুলির মধ্যে ‘বিয়ে’ ব্যাপারটাও ঢুকে গিয়েছে। একটা সময় পর্যন্ত নারী ও পুরুষের একসঙ্গে সংসার করতে শুরু করার ছাড়পত্র হিসেবে যে বিয়েকে দেখা হতো, এখন আর তা নয়। অনেকেই মনে করেন, একসঙ্গে থাকার জন্য আর বিয়ের দরকার নেই, আবার বিয়ে করলেই যে একসঙ্গে থাকতেই হবে, তারও মানে নেই।
এমনই আবহে পশ্চিমবঙ্গের একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, এখনকার সময়ের ছেলেমেয়েরা আর বিয়ে টেকাতে পারছে না। অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে ডিভোর্স হয়ে যাচ্ছে ২৮ শতাংশ দম্পতির। তবে তার চেয়েও বিস্ময়কর হল, ভালবেসে বিয়ের ক্ষেত্রে বা লাভ ম্যারেজে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রেই পরিণতি গড়াচ্ছে ডিভোর্স পর্যন্ত।

সম্প্রতি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের স্ট্যাটিসটিক্স বিশেষজ্ঞ সুদীপ ঘোষ ও তাঁর দলবল প্রায় সাড়ে চারশো বিবাহিত অল্পবয়সি দম্পতিকে নিয়ে একটি সমীক্ষা করেন। কলকাতা, বর্ধমান, দুর্গাপুর, আসানসোল– এই শহরগুলির বাসিন্দা, ২২ থেকে ৩২ বছর বয়সি কর্মরত যুবক-যুবতীদের সঙ্গে কথা বলা হয় সমীক্ষায়। সমীক্ষকরা মোট সাতটি সূচক ঠিক করেছিলেন এই দম্পতিদের সম্পর্ক ছানবিন করতে। সেগুলি হল, ডিভোর্সের হার, দাম্পত্য সন্তোষ, ঝগড়াঝাঁটি মেটানোর হার, পরিবারের অংশগ্রহণ ও হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থা, সামাজিক চাপ, কতটা চাহিদা মিটল।

দেখা গেছে, দাম্পত্য সন্তোষ যথেষ্ট আছে দু’রকমের বিয়েতেই। কিন্তু ঝগড়াঝাঁটিতে এগিয়ে লাভ ম্যারেজ, আবার সমস্যা মেটানোর হারে এগিয়ে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ। প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ঝগড়া মিটে যায় তাদের। ভালোবাসার বিয়েতে সেই হার ৪০ শতাংশ। আবার প্রেমের বিয়েতে যেখানে পারিবারিক অংশগ্রহণ মাত্র ২০ শতাংশ, অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে তা ৭০ শতাংশ। আর্থিক স্বচ্ছলতার ক্ষেত্রেও ১০ শতাংশ এগিয়ে দেখাশোনার বিয়ে। আবার সামাজিক এবং পারিপার্শ্বিক চাপ প্রায় ৬০ শতাংশ থাকে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে, সেখানে ভালবাসার বিয়েতে সেই চাপ মাত্র ৩০ শতাংশ।

২০২৪ সালের মার্চ, এপ্রিল, মে– এই তিন মাস ধরে চলা সমীক্ষায় সব মিলিয়ে উঠে এসেছে, দেখাশোনার বিয়েতে দম্পতিদের চাহিদা পূরণ হয়েছে বেশি মাত্রায়। প্রেমের বিয়েতে তার সংখ্যা কম। সমীক্ষক দলের তরফে বলা হয়েছে, প্রচুর বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে আজকাল। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, বিয়ে না ভাঙলেও, ভিতরে যে যাঁর মতো সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কারও খবর রাখেন না, হস্তক্ষেপও করেন না। অযাচিত পারিবারিক হস্তক্ষেপেও তিক্ততা বাড়ছে দম্পতির মধ্যে। আবেগের বশে বহু সিদ্ধান্ত ভুল হয়ে যাচ্ছে, আবার ধৈর্য কম হওয়ার কারণে ঠিক পথ খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। এই সমীক্ষায় যা বলা হয়েছে, তা একদম খাঁটি বাস্তব। সৌজন্যে: দ্য ওয়াল

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও