অবরুদ্ধ বাংলাদেশে রক্তমাখা শনিবার – সারাদিনের ঘটনাবলী

কারফিউ ভঙ্গ করে বাংলাদেশে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বহু মানুষ। এই বিক্ষোভে সরকারের ভয়ঙ্কর প্রতিক্রিয়ায় আরও অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। ফলে স্থানীয় সময় শনিবার রাত নাগাদ মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৮ জনে। সরেজমিনে বাংলাদেশে বিক্ষোভের খবর সংগ্রহে জড়িত নেত্র নিউজের প্রতিবেদকরা বলছেন, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে, কেননা শুধুমাত্র সীমিত সংখ্যক হাসপাতাল থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালিয়েছে। রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারে পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছে। হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের সকলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

আন্দোলনের প্রথম দিনগুলোতে মৃতদের শরীরে অজস্র রাবার বুলেটের আঘাত প্রত্যক্ষ করা গেলেও, নেত্র নিউজের হাতে আসা সাম্প্রতিক মৃতদেহের ছবিতে তাজা গুলির ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। এখনকার বেশিরভাগ মৃতদেহ আত্মীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে বা ছোট স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলে আমাদের প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন। সাধারণত পুলিশি ঘটনায় নিহতদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু লাশের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম অবস্থায় পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পুলিশ নিহতদের সংখ্যা জানাতে অস্বীকার করেছে। গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ সাংবাদিকদের মৃতের সংখ্যা দিয়েছে। কিন্তু শনিবার থেকে তারা তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানায়। হাসপাতালের কর্মীরাও আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা দিতে রাজি হননি।

বাংলাদেশে চলমান কারফিউকে মূলত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার রাতে ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সাথে বৈঠকের পর এই কারফিউ ঘোষণা করেন। সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও কারফিউ প্রয়োগে তাদেরকে খুব একটা জোরালো ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। ঢাকার রাস্তায় রাইফেল ও এপিসি নিয়ে টহলরত সেনা সদস্য দেখা গেলেও, বিক্ষোভকারীদের উপর তাদের গুলি চালানোর কোনো সংবাদ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

এদিকে সরকার রবিবার ও সোমবার দুদিনের জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেছে।

শুক্রবার ও শনিবার সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের শক্তিশালী এক সাবেক মেয়র বিক্ষোভকারীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। একই ঘটনায় তার দেহরক্ষী নিহত হন।

নারায়ণগঞ্জে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী সাত তলা মহাসড়ক পুলিশ ভবনে হামলা চালায়। একজন পুলিশ পরিদর্শক জানান, হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ৩৪ জন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করতে হয়েছে।

শুক্রবার নরসিংদীতে একটি কারাগার থেকে অন্তত ৮২৬ জন বন্দি পালিয়ে গেছে। প্রায় ১২,০০০ মানুষ লাঠি, হকি স্টিক, রড ও চাপাতি নিয়ে কারাগারে হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীরা তিনটি পুলিস ব্যারাকেও আগুন লাগিয়ে দেয়।

প্রায় ৪,০০০ জন বিক্ষোভকারী রংপুরে একটি পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়, শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত চত্বরটি অবরুদ্ধ করে রাখে। সেখানে তিনজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।

নেত্র নিউজের প্রতিবেদকরা আরও জানিয়েছেন, কোটা বাতিলের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগের একটি আদেশের বিরুদ্ধে করা রিট আবেদনটি শিগ্রই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির জন্য উঠবে। হাইকোর্টের ওই আদেশ থেকেই চলমান বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোটা বাতিল করবে, যেহেতু হাসিনা আগেই তেমনটা ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।

এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ অন্তত চার জন ছাত্রনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৮ সালের সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া নুরুল হক নুরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ নাহিদকে গ্রেপ্তার করার কথা অস্বীকার করেছে।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেছেন — সরকারের সাথে মীমাংসায় যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকজন নেতা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর চাপে রয়েছেন ।

বিএনপির সিনিয়র নেতা নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকেও তাদের বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন-অর-রশিদ একটি টিভি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন বিএনপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে লাইফ সাপোর্টে থাকার গুজব প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার ডাক্তার জাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, তার শারিরীক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। তাকে সিসিইউ সুবিধাসহ এভারকেয়ার হাসপাতালের একটি কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশে চলমান শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের একটি ভিডিও বিবৃতি নেত্র নিউজ প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, আমরা বিশেষ কোনো পরিবর্তন, পরিমার্জন না করেই বিবৃতিটি প্রচার করছি।

বিবৃতির চুম্বকাংশ:

◾ “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে ছাত্রদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় শতাধিক ছাত্রকে পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের সমন্বয়কদেরকে গুম করা হয়েছে। […] ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।”

◾ “শহীদের লাশের সাথে বেইমানি করে আমরা গোলটেবিল বৈঠকে যেতে পারি না। আমরা এই পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসবো না। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আমাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত রাজপথে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।”

◾ “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এদেশের ছাত্র সমাজের যৌক্তিক আন্দোলনে এদেশের ছাত্র সমাজের ও জনসাধারণের পাশে থাকবে।”

◾ “দেশবাসীর প্রতি আহ্বান আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ান, আপনারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান, আপনারা আপনাদের সন্তানদের পাশে দাঁড়ান।”

◾ “আমাদের এই নয়টি দাবি”: ১) “ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে”; ২) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ; ৩) “যে সকল স্থানে ছাত্র নিহত এবং হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল সে সমস্ত স্থানের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারকে বরখাস্ত করতে হবে”; ৪) “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে”; ৫) “ছাত্র হত্যার দায়ে অভিযুক্ত প্রতিটি পুলিশ সদস্য এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদেরকে আটক করে হত্যা মামলা দায়ের করতে হবে”; ৬) নিহত এবং আহত ছাত্রদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ; ৭) সকল ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ; ৮) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হল খুলে দেয়া; ৯) আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কোনো শিক্ষার্থী যেন একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভাবে কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হন তার নিশ্চয়তা প্রদান।

◾ “আমাদের এই নয়টি দাবি যদি মেনে নেয়া হয় সেক্ষেত্রে আমরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে বসে আলাপ আলোচনা করব। সে আলাপ আলোচনা করে আমরা সরকারের সাথে সংলাপের বিষয়টি চূড়ান্ত করব। অন্যথায় আমাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলমান থাকবে।”-

-সৌজন্যে নেত্র নিউজ

এনডিটিভি কি বলছে?

-এই সপ্তাহের সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৩৩ জন নিহত হয়েছে, যা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের জন্য একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

-মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এবং পুলিশ সহিংস বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় শুক্রবার বাংলাদেশ সরকার একটি জাতীয় কারফিউ জারি করে এবং সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে।

-কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী ইন্টারনেট শাটডাউন আরোপ করেছে যা কার্যকর রয়ে গেছে। বাংলাদেশে এবং এর বাইরে যোগাযোগকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। সরকারি ওয়েবসাইটগুলি অফলাইনে রয়েছে এবং ঢাকা ট্রিবিউন, ডেইলি স্টার সহ প্রধান সংবাদপত্রগুলি তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি আপডেট করতে অক্ষম।

-বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী বিভিন্ন ল্যান্ড ট্রানজিট পয়েন্ট বা ফ্লাইটে ভারতে ফিরে এসেছে। বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বিদেশ মন্ত্রক বাংলাদেশে ভারতীয়দের নিরাপত্তা ও মঙ্গল নিশ্চিত করার জন্য সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করছে।

বিবিসি বাংলা কি বলছে?

কারফিউয়ের সময়সীমা আরো বাড়ল:

বাংলাদেশে শুক্রবার রাত থেকে জারি করা কারফিউয়ের সময়সীমা আরো বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ রয়েছে। তবে সেই সময় আরো বাড়ানো হয়েছে।

শনিবার রাতে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোববার বিকাল তিনটা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে।

তিনটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার বিরতি থাকবে।

এরপর পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আবার কারফিউ চলবে।

এই কারফিউয়ের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিলের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় ওই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। হাইকোর্টের সেই রায়ের পর থেকেই চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়।

এদিকে শুক্রবার জারি করা কারফিউয়ের মধ্যেও ঢাকায় সহিংসতায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কারফিউ প্রত্যাহার দাবি বিএনপির, আমির খসরু আটক:

সারাদেশে চলমান কারফিউ প্রত্যাহার ও সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত না করার দাবি জানিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছেন বলে দলীয় চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং থেকে বিবিসি বাংলাকে জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের পদত্যাগের দাবিতে কোটা সংস্কার ও রাষ্ট্র সংস্কারের চলমান আন্দোলন আরও বেগবান করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

ওদিকে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে রাতে তার বনানীর বাসা থেকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দলীয় চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবীর খান।

এর আগে শনিবার জাতীয় স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও শুক্রবার সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে আটক করেছিলো পুলিশ । আজ তাদের আদালতের উপস্থাপনের পর পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এক দিনের রিমান্ডে দিয়েছে তাদের।

কারফিউয়ের মধ্যেও শনিবার ঢাকায় নিহত হয়েছেন ১০ জন:

কারফিউ ও সেনা টহল চলার মধ্যেও শনিবার ঢাকায় সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ৯১ জন। এদের মধ্যে পুলিশের দুইজন সদস্য রয়েছে।

এদের মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগেই আটজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সদস্যদের মৃত্যুর ঘটনাও এখানেই ঘটেছে।

এছাড়া মিরপুরে ও আজিমপুরে দুইজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে সাভারের সংবাদদাতাদের কাছ থেকে বিবিসি জানতে পেরেছিল যে, সেখানে দুপুরের সহিংসতায় একজনের মৃুত্যু হয়েছে।

কারফিউয়ের প্রথম দিনে যাত্রাবাড়ী ছাড়াও, রামপুরা-বনশ্রী, বাড্ডা, মিরপুর, আজিমপুরে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

দুপুরের দিকে বিবিসির সংবাদদাতারা ঢাকার বাড্ডা ও সায়েদাবাদে দিয়ে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ দেখতে পেয়েছেন। সেই সময় পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ।

ঢাকার একাধিক হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব হাসপাতালে অনেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। তাদের অনেকের শরীরে গুলি ও সংঘর্ষের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় এ পর্যন্ত সারা দেশে অন্তত ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কারফিউ জারি করেছে সরকার। সেই সঙ্গে সারা দেশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাহী আদেশে রোববার ও সোমবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও