শুক্রবার বিকেলে মোদীর সঙ্গে মমতার বৈঠক

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা দেখা করলে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খাবে বলে নেতৃত্বকে জানিয়ে এসেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দাবি করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যেন মমতার সঙ্গে দেখা না করেন। তা অবশ্য বাস্তবে হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। আর সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার সময় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ।

শিক্ষা দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্ত, ইডির তদন্ত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি এবং টাকা-সোনার হদিস মেলার পরিপ্রেক্ষিতে, মোদী-মমতার আসন্ন বৈঠক তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও শুভেন্দুদের বক্তব্য ছিল, দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে যখন চেপে ধরা গিয়েছে তৃণমূলকে, তখন এ ধরনের বৈঠক কর্মীদের মনোবল ভেঙে যেতে পারে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, রাজ্য বিজেপি-র নেতাদের এই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

আগামিকাল বিকেলে নয়াদিল্লি আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী রবিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে তাঁর সঙ্গে মোদীর এমনিতেই এক মঞ্চে দেখা হবে। তা নিয়ে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু অমিত শাহের কাছে গিয়ে শুভেন্দু এবং দলের জাতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কাছে গিয়ে সুকান্ত বলেছিলেন, মমতার দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে বিজেপি। এই সময়ে মমতার সঙ্গে মোদী আলাদা বৈঠক করলে, রাজ্য বিজেপির মমতা-বিরোধিতা এবং আন্দোলনে জল ঢালার সামিল হবে। একই মত সুকান্তেরও।

সূত্রের খবর, অমিত শাহ এ বিষয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েছেন, সে বিষয়েই তিনি অবগত নন। পাশাপাশি নড্ডার বক্তব্য, বিজেপির আন্দোলন বন্ধ করার প্রশ্ন নেই। তবে তিনি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় প্রধানমন্ত্রী কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সরকারি স্তরে বৈঠক করতেই পারেন। তাতে সেই আন্দোলন লঘু হওয়ার কারণ নেই। তবে সব রাজ্য বিজেপি নেতাই যে শুভেন্দুদের মতের শরিক, তা নয়। যেমন দিলীপ ঘোষই মনে করেন, ভোট হবে ব্লকে, জেলায়, বুথে রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং আন্দোলনের ভিত্তিতে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি পর্যায়ে বৈঠক হলে কেনই বা তা লঘু হবে?
অন্য দিকে, রাজনৈতিক সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দিল্লি সফরটিকে আপাতত নিচু তারেই বাঁধতে চাইছেন। প্রথমে কথা ছিল, আগামিকাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন তিনি, মহাদেব রোডে, সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের বাড়িতে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া শুরু হয়। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর স্থির হয়, তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি, পরে নৈশাহার। নৈশাহারের পরিকল্পনাও কাল রাতে বাতিল করে দেওয়া হয়। কথা আছে, শুক্রবার সংসদে যাবেন মমতা। কিছুটা সময় কাটাবেন সেন্ট্রাল হলে।

দিল্লিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের উপর তৈরি হওয়া দুর্নীতির মেঘ কাটাবার চেষ্টা করবেন বলে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব। তারা অতীতে সারদা-নারদ কাণ্ডের উদাহরণ তুলে বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাঁতের অভিযোগ তুলছেন আগে থেকেই। তৃণমূলের তরফে তখন বলা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দাবিদাওয়া, ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ না পাওয়ার বিষয়টি তুলবেন। (সৌজন্যে: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন)

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও