চোখে জল নিয়ে মঞ্চেই জীবন্ত লক্ষ্মীর পুজো চাকরিপ্রার্থীদের

দুর্গাপুজোর সময় ওরা কেঁদেছিলেন। লক্ষ্মীপুজোর দিনেও চোখে জল চাকরি প্রার্থীদের। রবিবার লক্ষ্মীপুজোর দিনে চাকরিপ্রার্থীকে জীবন্ত লক্ষ্মী সাজিয়ে দেবীর আরাধনা করলেন প্রাইমারি ২০১৪ পাস নট ইনক্লুডেড প্রেসেন্ট লিস্টের চাকরি প্রার্থীরা। কোথাও আবার সাদা কাগজ রেখে চলে পুজো। একজনকে লক্ষ্মী সাজানো হয়েছে তো আরেকজনকে পুরোহিত। বাকি চাকরি প্রার্থীরা ফুল দিচ্ছেন, মেয়েরা উলু ধ্বনি দিচ্ছেন। দুর্গাপুজোর পর লক্ষ্মীপুজোতেও হৃদয় বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ল ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ চত্বরে। এদিন এক আন্দোলনকারীকে লক্ষ্মীবেশে সাজানো হয়। হাতে ছিল পদ্মফুল ও ধানের ছড়া। সমস্ত নিয়মনীতি মেনেই তাঁকে পুজো করা হয়। হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো আমাদের ধরনামঞ্চে’। চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, নিয়োগপত্র না পেলে তাদের আন্দোলন চলবে। কেউ কেউ বলছেন, এরপর আমরণ অনশন নয়তো স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। এক চাকরি প্রার্থী বলেন, ‘এই সরকার যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের মেধাকে চাপা দেওয়ার জন্য কার্নিভালের দিন সাদা কাপড় দিয়ে ধর্ণা মঞ্চ চাপা দিয়েছিল। এই ভাবে বাংলার মেধাকে চাপা দেওয়া যাবে না।’
আরেক আন্দোলনকারী বলেন, “এত দুর্নীতি যে দুর্নীতির ভারে আমরা চাপা পড়ে গেছি। আমাদের সকলের নিয়োগ না হলে আমরা ধর্নামঞ্চ থেকে উঠছি না”।
মৌমিতা ঘোষ নামে এক চাকরি প্রার্থী জানান,২০১৪ প্রাইমারি টেট পাশ নট ইনক্লুডেড একতামঞ্চের ধর্না অবস্থানের ৫৪ তম দিনে লক্ষ্মী পূজা ও লক্ষ্মী বন্দনা, ঘরের লক্ষ্মী রাস্তায়। এটা বঙ্গসংস্কৃতির লজ্জা! বাংলার কলঙ্ক.! ধিক্কার জানাই পর্ষদ সভাপতি ও নির্লজ্জ সরকার কে।’
চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে যাকে লক্ষ্মী সাজানো হয়েছিল তার নাম মৌসুমী বিশ্বাস হবে, তার বাড়ি নদিয়ার কল্যানী। আর যাকে ব্রাহ্মন সাজানো হয়েছিল তার নাম অভিষেক ব্যানার্জী, তার বাড়ি নদীয়ার শান্তিপুর। কেঁদে কেঁদেই এদিন জীবন্ত লক্ষ্মীরা আন্দোলন করেন। কেন লক্ষ্মী সেজে বসলেন? মৌসুমীর জবাব, কী করবো আজ লক্ষ্মীপুজোর দিনেও আমরা বাড়িতে বসতে পারিনি, আমাদের ধর্ণা মঞ্চে আসতে হয়েছে। বাড়ি থেকে যখন বের হই তখন ছেলে আমাকে বলে মা আজ লক্ষ্মী পুজো যেয়োনা, কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই, আমাদের এখানে আসতে হয়েছে আমাদের ন্যায্য চাকরির জন্য।’ তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, আমাদের আজ বাড়ি থাকার কথা কিন্তু বাড়ি থাকতে পারিনি।’ এরপর আরও কাঁদতে লাগলেন, আর বেশি কথা বলতে পারেননি।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও