দুই ভূমিকম্পে ছিন্নভিন্ন তুরস্ক-সিরিয়া

সিরিয়ার সীমান্তের কাছে, দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের বিস্তৃত অঞ্চলে গতকাল দু’টি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ভূমিকম্পে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ২১০০ মানুষ নিহত হয়েছে। এখনো আটকা পড়ে আছে অনেকে। ইতোমধ্যে কয়েক ডজন দেশ অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান এ ঘটনাকে গত ৮৪ বছরের মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় বলে অভিহিত করেছেন। ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় তিন হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তুরস্কের ১০টি শহর ও প্রদেশের স্কুল এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি হাতায়, মারাশ এবং আন্তেপের বিমানবন্দরগুলো বন্ধ বা আংশিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।

ভূমিকম্পের ফলে তুরস্কে কমপক্ষে ১২শ’ এবং সিরিয়ায় ৭৮৩ জন নিহত হয়েছেন। এর উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের কাহরামানমারাস থেকে ৬৭ কিলোমিটার উত্তর উত্তর-পূর্বে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে দুই কিলোমিটার গভীরে। এ ভূমিকম্প সূদুর গ্রিনল্যান্ডেও অনুভূত হয়েছে।

সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলেপ্পো, লাতাকিয়া, হামা এবং তারতুস প্রদেশে অনেক মানুষ মারা গেছে। আগামী কয়েক ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেক ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্ত‚পের বিশাল স্ত‚পের নিচে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধারকারী দল মোতায়েন করা হয়েছে। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমন সোয়লু বলেছেন, ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: গাজিয়ানটেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালত্য, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিস। গাজিয়ানটেপের উত্তর-পূর্বে মালটায়া প্রদেশে অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সানলিউরফাতে, পূর্বে, ১৭ জন মারা গেছে। এবং দিয়ারবাকির এবং ওসমানিয়েতে আরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দিয়ারবাকিরে থাকা বিবিসির তুরস্ক প্রতিনিধি বলেন, শহরটির একটি শপিংমল ধসে পড়েছে। গাজা উপত্যকায় থাকা বিবিসির প্রযোজক রুশদি আবুয়ালুফ বলেন, তিনি যে বাড়িতে থাকেন সেখানে প্রায় ৪৫ সেকেন্ড ধরে কম্পন অনুভূত হয়েছে। স্থানীয় সিসমোলজিস্টরা ভূমিকম্পটির মাত্রা ৭ দশমিক ৪ ছিল বলে জানাচ্ছেন। তারা বলছেন যে, ভূমিকম্পটি আঘাত হানার কয়েক মিনিট পরেই দ্বিতীয় আরেকটি কম্পন অনুভূত হয়।

দুর্গত এলাকা থেকে যেসব মর্মান্তিক ছবি পাওয়া যাচ্ছে তাতে বাসাবাড়ি ও সড়কে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ এবং ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে পড়া লোকদের সন্ধানকারী উদ্ধারকারী দলগুলিকে মরীয়া হয়ে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। তুরস্কের ১০টি শহর ও প্রদেশের স্কুল এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি হাতায়, মারাশ এবং আন্তেপের বিমানবন্দরগুলি বন্ধ বা আংশিকভাবে বন্ধ করা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি নিউজ, আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও