বিধায়ক-মন্ত্রীদের ঢালাও হারে বেতন বাড়ানোর তীব্র প্রতিবাদ করল সিপিআইএম ও ওয়েলফেয়ার পার্টি

 

দা হিন্দুস্তান গ্যাজেট বাংলা:

দেনায় জর্জরিত বাংলা। এই অবস্থায় হটাৎ করে বিধায়ক- মন্ত্রীদের বেতন বাড়িয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমুল কংগ্রেস সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে সিপিআইএম এবং ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া পশ্চিমবঙ্গ শাখা।
ওয়েলফেয়ার পার্টির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার হাসান জানান, একদিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন টাকা নেই, আরেকদিকে যেখানে সেখানে টাকা ঢালছেন। এই দ্বিচারিতা বন্ধ করুন। অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বিধায়কদের বেতন বাড়ানো হল কেন? নিজেদের বেতন নিজেরাই বাড়িয়ে নিতে লজ্জা করলো না?”
তিনি আরও জানান, সরকার পুরো দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাই রাজ্য চালাতে ব্যর্থ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদাসীন ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
বর্তমানে রাজ্যে লক্ষ লক্ষ পদ শূন্য। হাজার হাজার যোগ্য চাকরী প্রার্থী পথে বসে অন্দোলন করছেন। কোটি কোটি বেকার কাজ না পেয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। বাংলায় কাজ না পেয়ে অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে যাচ্ছে , কেউ কেউ মারা যাচ্ছে, আহত হয়েও অনেকে সাহায্য পাচ্ছে না। হাজার হাজার স্কুল বন্ধের মুখে। এই অবস্থায় বিধায়কদের বেতন বাড়ল কাকে খুশি করতে? জনগনের টাকা এইভাবে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন না।’

ওয়েলফেয়ার পার্টির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার হাসান আরও বলেন, ভোটে জিতে জণগণের জন্য কাজ করতে হয়। রাজনীতি টাকা উপার্জনের জায়গা নয়, মানুষের জন্য কাজ করে নিজ হাতে বৈধ উপার্জন করার জায়গা। রাজ্যে কয়দিন বিধানসভা বসে? কীসের জন্য বেতন? এমন অনেক বিধায়ক, মন্ত্রী আছেন যারা কোটিপতি, এতো বেতন বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের লাভ কী?’

অন্যদিকে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বিধায়ক – মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির দিনটিকে ‘রাজ্যের কালো দিন’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তার কথায়, ‘‘আজকের দিন রাজ্যে কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’’
সিপিআইএম বলছে, সরকারি কর্মচারীদের ডিএ বন্ধ। সাড়ে ৬ লক্ষ পদ শূন্য রাজ্যে। টাকার অভাবে নিয়োগ নেই। অবস্থানে ৯০০ দিন বসে যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। সে রাজ্যেই বিধায়ক- মন্ত্রীদের এতো বেতন বাড়ল!

সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘রাস্তায় বসে রয়েছেন যাঁরা, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তাঁদের মুখঘুলো একবার মনে পড়ল না? একবার মনে হলো না যে ওঁদের বঞ্চিত করে নিজেদের মাইনে বাড়াবো কী করে?’’

জানা গেছে, এর আগেও তৃণমুল কংগ্রেস সরকার অনেকবার বিধায়কদের বেতন বাড়িয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এমন একটা পরিস্থিতিতে বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন যখন রাজ্যে টাকার অভাবে অনেক কাজ বন্ধ রয়েছে। মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিপূরন পাচ্ছেন না। সরকারি কর্মচারিরা বকেয়া ডিএ’র দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে জাচ্ছেন। উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একাধিকবার দাবি করেছেন যে সরকারের কোষাগার খালি, কোন টাকা নেই। মিড-ডে-মিলের বরাদ্দ কমেছে। পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে না শিশুরা। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রী বিধায়কদের ভাতা বৃদ্ধির ঘোষনা করলেন।

উল্লেখ্য বেতন ছাড়াও বিধায়করা বিভিন্ন ভাতা পেয়ে থাকেন। রাজ্যের একজন বিধায়ক বেতন ভাতা মিলিয়ে মাসে পান ৮১ হাজার ৮৭০ টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষনার ফলে সেই টাকা প্রতিমাসে বেড়ে হবে ১লক্ষ ২১ হাজার ৮৭০ টাকা।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও