চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে রোগীমৃত্যু হলেও ডাক্তারদের অপরাধ লঘু করে দেখা হবে

 

চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে রোগীমৃত্যু হলেও ডাক্তারদের অপরাধ লঘু করে দেখা হবে। এরকমই বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে নতুন ন্যায় সংহিতা বিলে। বুধবার অবশ্য লোকসভায় দাঁড়িয়ে স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আশ্বাস ছিল, ‘চিকিৎসার গাফিলতির জেরে রোগীমৃত্যু হলেও চিকিৎসকদের দোষী সাব্যস্ত করা হবে না। ন্যায় সংহিতা বিলে সংশোধনী এনে আমরা ডাক্তারদের অপরাধী তকমা দেওয়া বন্ধ করব।’ যদিও সেই সংশোধনী আসার আগেই, বৃহস্পতিবার ‘বিরোধীশূন্য’ রাজ্যসভায় পাশ হয়ে গেল ফৌজদারি অপরাধ সংক্রান্ত তিনটি বিল— ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম। ফলে ডাক্তাররা সম্পূর্ণ নির্দোষ হিসেবে মুক্তি পাননি। তবে তাঁদের অপরাধ অনেকটাই লঘু করে দেখা হচ্ছে। ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী, চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানা। কিন্তু যদি সেই গাফিলতি ডাক্তারের হয়, তাহলে ১০৬ ধারায় সর্বাধিক কারাদণ্ড হতে পারে মাত্র দু’বছরের।
ন্যায় সংহিতায় এফআইআর কিংবা পুলিস হেফাজতের মেয়াদের নিয়মও বদলেছে। বর্তমানে কোনও অভিযুক্তকে পুলিস হেফাজতে রাখার সর্বাধিক মেয়াদ ১৪ দিন। কিন্তু নয়া বিলে বলা হয়েছে, কোনও বিচারক চাইলে কাউকে ৯০ দিন পর্যন্ত পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিতে পারেন। শুধু তাই নয়, অভিযোগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর নাও করতে পারে থানা। প্রাথমিক তদন্ত করা হবে। সত্যতা মিললে স্বল্প অপরাধের ক্ষেত্রে তিন দিন, গুরুতর অপরাধে ১৪ দিনের মধ্যে এফআইআর করতে হবে। আর মামলার মীমাংসা হবে তিন বছরে, দাবি শাহের।
ব্রিটিশ আমলের সিআরপিসি, আইপিসি এবং এভিডেন্স আইন বাতিল করতেই আনা হয়েছে এই তিনটি বিল। লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও এদিন বিনা বাধায় সেগুলি পাশ হয়ে যায়। বিরোধীহীন রাজ্যসভায় দিনভর এই তিনটি বিল নিয়ে আলোচনা চলে। তাতে অবশ্য সরকারপক্ষের এমপিরা শুধুই নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের বন্দনাই করে গিয়েছেন। প্রত্যেকে এক সুরে দাবি করেছেন যে, ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হলেও ব্রিটিশদের তৈরি আইনই চলছে দেশে। এই বিল এনে ভারতকে ইংরেজদের দাসত্ব থেকে মুক্ত করলেন অমিত শাহ। সংসদে বিরোধীরা হাজির না থাকলেও এদিন বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস এমপি পি চিদম্বরম। বলেছেন, ‘কীসের দাসত্ব মুক্তি? ভালো করে তিনটি বিল পড়ে দেখলাম, ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ওই পুরনো ব্রিটিশ আইন থেকে হুবহু নকল করে বসিয়ে দিয়েছে মোদি সরকার। শব্দ-বাক্যও পর্যন্ত এক।’ খবর বর্তমান পত্রিকার।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও