সন্দেশখালি নিয়ে সিপিআই(এম এল) লিবারেশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির প্রেস বিবৃতি

 

সন্দেশখালি নিয়ে সিপিআই(এম এল) লিবারেশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি এক প্রেস বিবৃতিতে যা লিখেছে –

 

প্রায় মাস খানেক ধরে বসিরহাট পুলিশ জেলার সন্দেশখালি উত্তপ্ত, স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য শেখ শাজাহানের বাড়িতে ইডি কর্মকর্তাদের আগমন ও ‘স্বতঃস্ফূর্ত গণরোষে’ ইডি কর্মকর্তার আহত হওয়ার ঘটনার পর থেকে সন্দেশখালি অশান্ত হয়ে ওঠে। ঘোলাজলে মাছ ধরতে আসরে নামে বিজেপির স্থানীয় কার্যকর্তারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও তার পার্টি পরিচিত ঢঙেই গণরোষকে সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও হিংসাত্মক উত্তেজনা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসবে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে বিজেপির দিক থেকে এই ধরনের চেষ্টা চলতেই থাকবে তা আজ পরিস্কার। সন্দেশখালির মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, ন্যায় বিচারের দাবিতে আপনাদের আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যান। সাথে সাথে বিজেপির অপচেষ্টা পরাস্ত করুন।
সন্দেশখালির নির্যাতিত, দরিদ্র দলিত, আদিবাসী , সংখ্যালঘু গ্রামবাসী, নারী পুরুষ নির্বিশেষে এলাকার চরম দুর্নীতিগ্রস্ত, লুঠের টাকায় ফুলেফেঁপে ওঠা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শেখ শাজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এলাকায় এলাকায় এই সমস্ত অপরাধী কার্যকলাপের পেছনে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদত থাকে। তেভাগা আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত এই বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি, ন্যাজোট, এবং হিঙ্গলগঞ্জ, হাড়োয়া অঞ্চলে বিগত দিনে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনের ফলে কৃষক ও কৃষিমজুররা যে অধিকার অর্জন করেছিলেন,আজ শাসক দলের প্রত্যক্ষ মদতে সেই অধিকার কেড়ে নিতে উদ্যত ভুঁইফোড় নেতারা। বিগত দিনেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের ঘটনা আমরা দেখেছি।

সন্দেশখালি অঞ্চলের সাম্প্রতিক আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকা মহিলারা গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন শাসক দলের ভুঁইফোড় নেতারা মহিলাদের সঙ্গে রাতবিরেতে অশালীন আচরণ করতো। প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যেত। পুলিশের ভূমিকাও ছিলো নির্যাতনকারীদের পক্ষে। আমরা এই ধরনের অমানবিক ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।

গত কয়েক দিন ধরে আন্দোলনরত মানুষের সঙ্গে কথা না বলে উল্টে তাদের ধরপাকড় করা হচ্ছে, মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে পুলিশ ১১৮ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে। গোটা সন্দেশখালি অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রেখেছে প্রশাসন। শাসক কোন নেতাই ক্ষুব্ধ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে এলাকায় যায়নি। উল্টে বামপন্থী দলগুলোর প্রতিনিধিরা যাতে যেতে না পারে, তার জন্য ব্যারিকেড তৈরি করেছে। রাজ্য প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি জানাই, অবিলম্বে সন্দেশখালিতে স্বাভাবিক জনজীবন ফিরিয়ে আনুন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। দুর্নীতি ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত শাসক দলের নেতা ও পুলিশ প্রশাসনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালির এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। অবিলম্বে সন্দেশখালিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলুন। দলের অপরাধী নেতাদের বহিষ্কার করুন। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির অপচেষ্টা রোধে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও