ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক উত্তেজনা! বিজেপিতে যোগদানের জল্পনার মধ্যে দিল্লিতে চম্পাই সোরেন

ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও জেএমএম নেতা চম্পাই সরেনকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত৷ চম্পাই সোরেন বিদ্রোহ করে জেএমএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবার চম্পাই সোরেন দিল্লি পৌঁছেছেন। জানা যাচ্ছে, তিনি এখানে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সাথে দেখা করতে পারেন। যদিও দিল্লি পৌঁছে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে চম্পাই সোরেন বলেন, তিনি ব্যক্তিগত কাজে দিল্লি এসেছেন। মিডিয়া যখন চম্পাই সরেনকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে আপনি দিল্লিতে কোনও নেতার সাথে দেখা করেছেন কিনা। তিনি বলেন, “আমি এখানে ব্যক্তিগত কাজে এসেছি, কাজ শেষ করে চলে যাব।” তারপর যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তিনি জেএমএমে থাকবেন নাকি ছেড়ে যাবেন? তিনি বলেছেন, “আমি যেখানে আছি সেখানেই থাকব।”

কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছেছেন চম্পাই সোরেন। সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, শনিবার কলকাতায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন চম্পাই সোরেন। চম্পাই সোরেনকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন তিনি কলকাতা গেলেন? এর চম্পাই সোরেন স্পষ্ট উত্তর দেননি এবং বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে তিনি পরে জানাবেন’। চলতি বছরেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতিতে চম্পাই সোরেন বিজেপিতে যোগ দিলে তা হবে ক্ষমতাসীন জেএমএম-এর জন্য বড় ধাক্কা।  মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, চম্পাই সোরেনের নিজ গ্রাম এবং মাহুলডিহ এলাকায় জেএমএম-এর কার্যালয় ও বাজার থেকে জেএমএম পতাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

হেমন্ত সোরেন যখন গত জানুয়ারিতে জমি কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হন, যার কারণে তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। হেমন্ত সোরেনের পদত্যাগের পর ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন চম্পাই সোরেন। জুলাই মাসে, যখন হেমন্ত সোরেন জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন, চম্পাই সোরেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং হেমন্ত সোরেন আবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এর পর খবর আসতে থাকে চম্পাই সোরেন হেমন্ত সোরেনের ওপর ক্ষুব্ধ। ঝাড়খণ্ড বিজেপি চম্পাই সোরেনের পদত্যাগকে একটি ইস্যু বানিয়েছিল। বিজেপি অভিযোগ করে, চম্পাই সোরেনের পদত্যাগ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের পরিবার ছাড়া অন্য কোনও নেতা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন না। হেমন্ত সোরেনের বিরুদ্ধে স্বার্থপর রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে চম্পাই সোরেনের পদত্যাগকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের অপমান বলেও অভিহিত করেছে। 

চম্পাই সোরেন ঝাড়খণ্ডের জন্য রাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করেছিলেন। বিশেষ করে রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়ে চম্পাই সোরেনের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। চম্পাই সোরেনকে কোলহানের সিংহও বলা হয়। এমতাবস্থায়, চম্পাই সোরেন যদি জেএমএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন, তাহলে দলটি উপজাতীয় ভোটব্যাঙ্ক থেকে ভাল সমর্থন পেতে পারে বলে আশা করছে। 

ইন্ডিয়া টুডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ছয় বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। তারা চম্পাই সোরেনের সঙ্গে দিল্লিতে গিয়েছেন। সূত্রের খবর, চম্পাই সোরেনের সাথে বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। গত রাতে, তিনি কলকাতায় ছিলেন, যেখানে তিনি বাংলার বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাথে দেখা করেছিলেন। সূত্রগুলি আরও ইঙ্গিত করে, সোরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সাথে ক্রমাগত যোগাযোগ করছেন।

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও