নিয়োগ দুর্নীতির আবহেই পরবর্তী টেটের তোড়জোড় শুরু, জেলায় পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা চাইল পর্ষদ

প্রতি বছর টেট (প্রাথমিকে শিক্ষক পদে যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা) হবে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদে দায়িত্বভার নেওয়ার পর এ কথা ঘোষণা করেছিলেন গৌতম পাল। তার কয়েক দিনের মধ্যেই পরবর্তী টেট করার জন্য এ বার তোড়জোড় শুরু করে দিল পর্ষদ।

প্রাথমিকে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য পরবর্তী পরীক্ষার আয়োজন করতে জেলাগুলিতে পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা চেয়ে জেলা প্রাথমিক স্কুল পর্ষদগুলিকে চিঠি দিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এ নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে প্রত্যেক জেলায় পরীক্ষা গ্রহণের জন্য সঠিক পরিকাঠামো আছে কি না, তা যেমন জানতে চাওয়া হয়েছে, তেমনই পরীক্ষাকেন্দ্রের তালিকা চেয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদে দায়িত্ব নিয়েই গৌতম বলেছিলেন, ‘‘ সব কিছু স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে এ বার। আগামী বছর থেকে প্রতি বছর টেট হবে। রেজাল্ট বেরোবে। চাকরিও হবে।চেষ্টা করব যেন কোনও অভিযোগ না থাকে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার জন্য ‘গ্রিভান্স সেল’ খোলা হবে।’’ সেই মন্তব্যের কয়েক দিনের মধ্যেই টেট করা নিয়ে পর্ষদ প্রস্তুতি শুরু করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।

এর আগে, পর্ষদের সভাপতি ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। টানা ১১ বছর ওই পদে ছিলেন তিনি। গত ২০ জুন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে ওই পদ থেকে অপসারিত করেন। আদালতের নির্দেশে অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব নেন রত্না চক্রবর্তী বাগচী। তার পরই গৌতমকে নিয়োগ করা হয়।

শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র ঘটনায় উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। ‘দুর্নীতি’ সরিয়ে স্বচ্ছতা ফেরাতে মরিয়া রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি, ১১ সদস্যের অ্যাড হক কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ওই কমিটিতে রয়েছেন লেখক নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, ভাষা শিক্ষিকা স্বাতী গুহ, উচ্চ শিক্ষা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান কৌশিকি দাশগুপ্ত, সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার এবং অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তীর মতো বিশিষ্টজনেরা।

বৃহস্পতিবার টেট মামলার শুনানিতে প্রাথমিকের শিক্ষা পর্ষদের এই নতুন কমিটির প্রশংসা করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, অভীক মজুমদারের মতো ব্যক্তিরা আছেন। বর্তমান চেয়ারম্যানও ভাল। কোনও পুরসভার চেয়ারম্যানের মতো নয়। আশা রাখছি, আস্তে আস্তে পরিবর্তন হবে। একটা সময় আমিও পর্ষদের হয়ে কাজ করেছি। সবটা চিনি। এখনকার অবস্থা দেখলে খুবই খারাপ লাগে। এখন সেখানেই আমাকে সিআরপিএফ ঢোকাতে হল। আমি মনে করি তখন স্বচ্ছতা ছিল, দুর্নীতি ছিল না।’’
সৌজন্যে: আনন্দবাজার অনলাইন

সর্বশেষ সংবাদ

জনপ্রিয় গল্প

সর্বশেষ ভিডিও